আমাকে কেউ নাড়ু খেতে দিক
৩ অক্টোবর ২০২২ ১৮:১৪
আমাদের ছোটবেলায় দুর্গাপূজাটা একটা অদ্ভুত আবহ নিয়ে আসতো। যেখানে সেখানে মেলা। মেলায় মিষ্টি, মন্ডাই, খেলনা আর গ্রামীণ সাজগোজের দোকান। ২০-৩০ টাকা নিয়ে মেলায় ঢুকলে মনভরে ঘুরে ফিরে আসা যেত। এই নাগরদোলা তো ওই পুতুল নাচ। একবার মিষ্টি খাওয়া তো আরেকবার ঘটি গরম। সে এক অদ্ভুত সুন্দর সময়। আমরা যে অন্য কারো ধর্মীয় উৎসবে আনন্দ করছি সেটা মাথাতেই আসত না। মনে হতো আমারই পাড়াপড়শীর উৎসব, সে তো আমারই উৎসব। হিন্দু বন্ধুদের হাতে টাকার রম-রমা অবস্থা থাকতো পূজার সময়। ওরা খাওয়াত, খেলনা কিনে এনে দেখাত, খেলতাম একসাথে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ওঠা পর্যন্ত পূজার এই সার্বজনীনতা উপভোগ করেছি। বাড়ি গিয়ে সারাদিন টো টো করে পূজোর মেলায় বন্ধুবান্ধবীদের সাথে ঘুরে বেড়িয়েছি। তারপর সবাই মিলে দুপুরের খাওয়া খেয়েছি আমাদের বাড়িতে, আমার মায়ের হাতের রান্না। এখন যত হিসেব নিকেশ মানুষ করে, এত হিসেব আমাদের করতে হয়নি।
স্কুল থেকে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ফেরার পথে ঢাক পেটানো দেখতে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় যে স্তব্ধ মুগ্ধতা, সেটা আমাদের চোখ থেকে হঠাৎ হারিয়ে গিয়েছে। তবুও আশা রাখি সুদিন আবার ফিরে আসবে। সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা। সকলের দুর্গতি বিনাশ হোক। আমাকে কেউ নাড়ু খেতে দিক।
লেখক: আইনজীবী
সারাবাংলা/এজেডএস