সারাবাংলা; সারা বাংলার মানুষের গণমাধ্যম
৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:৩০
অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে মূলধারার গণমাধ্যম হিসেবে সারাবাংলা পাঠকের মাঝে ঠাঁই করে নিতে সক্ষম হয়েছে। সংবাদের বৈচিত্র্যতায়, সংবাদের নির্ভরতায় এবং পাঠকের চাহিদা মাথায় রেখে নিউজ ও অন্যান্য বিভাগের নিয়মিত উৎকর্ষ সাধনে আজ সারা বাংলা সত্যিকার অর্থে সারা বাংলার মানুষের গণমাধ্যম হতে পেরেছে। যেকোনো গণমাধ্যমের জন্যই এ এক বিরাট অর্জন। এই জনপ্রিয় গণমাধ্যমের আজ (৬ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রই তীব্র প্রতিযোগীতামূলক। গণমাধ্যমও এর বাইরে নয়। আজ অসংখ্য গণমাধ্যম রয়েছে পাঠকের সামনে। রয়েছে প্রতিযোগিতাও। সবার মূল লক্ষ্য হলো অধিক সংখ্যক পাঠকের কাছে সংবাদ পৌছে দেওয়া। নিজেদের অবস্থান শক্ত করা। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো নতুনত্ব এবং বৈচিত্র্যতা। অর্থাৎ পাঠক কেন আমার পত্রিকাটি পড়বে এই চিন্তা থেকেই নতুনত্ব আনতে হয়। শুরু থেকেই সারাবাংলার প্রতি আগ্রহ ছিল। তারপর সারাবাংলার মুক্তমত বিভাগে লিখতে শুরু করি। যত্ন সহকারে আমার লেখা সারাবাংলা প্রকাশ করতে থাকে। এজন্য সারাবাংলার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বিশ্বজুড়েই গণমাধ্যমগুলো এখন নানা সমস্যায় আবর্তিত। সাংবাদিকতা পেশা এখন আগের থেকে বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এখানে টিকতে হলে বেশ পরিশ্রম করতে হয় এবং একটি লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হতে হয়। তবে গণমাধ্যম ধারার যে বিকাশ সাধন হয়েছে তা বেশ ইতিবাচক। একসময় গণমাধ্যম বলতে প্রিন্ট পত্রিকা এবং টিভি মিডিয়াকে বোঝানো হতো। এখন এর পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন গণমাধ্যম বলতে, প্রিন্ট পত্রিকা, টিভি মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকা, রেডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যম আজ সংবাদের জন্য জনপ্রিয়। অনলাইন পত্রিকা নিয়ে অভিযোগ-অনুযোগ থাকলেও মূল ধারার যেসব অনলাইন পত্রিকা রয়েছে সেগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য। নিত্য নতুন গণমাধ্যম আসছে। এসবের মধ্যে অনলাইন গণমাধ্যমই বেশি। এত এত অনলাইন গণমাধ্যমের ভেতর নিজেকে চেনানোর কাজটি সহজ নয়। এতসব চ্যালেঞ্জ নিয়েই পাঠকের সামনে আসে সারাবাংলা।
অনলাইন পত্রিকাগুলোর প্লাটফর্ম মজবুত হয় অন্যসব পত্রিকার মতোই সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায়, সংবাদের গ্রহণযোগ্যতায়, সংবাদের বৈচিত্রে, সংবাদ উপস্থাপনায়, যথার্থতায় এবং পাঠকের সংশ্লিষ্টে। সংবাদের পাতাগুলোর পাশাপাশি সারাবাংলায় রয়েছে অর্থনীতি, রাজনীতি, খেলা, বিনোদন, লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, মতামত, ক্যারিয়ার, ধর্ম, রাশিফল, কৃষি, ফিচার প্রভৃতি পাতা। গণামাধ্যমটির একটি ইংরেজি ভার্সন প্রয়োজন বলে মনে করি। দৈনিক প্রিন্ট পত্রিকা হোক আর অনলাইন পত্রিকা হোক বা অন্য যেকোনো গণমাধ্যম হোক প্রধান লক্ষ্য থাকে মানুষের কাছে পৌছানো, পাঠকের বিশ্বস্ততা অর্জন করা, পাঠকের সাথে যোগসূত্র তৈরি করা। সেদিক বিবেচনায় সারাবাংলা তার পথযাত্রায় অনেকটাই অগ্রসর হতে পেরেছে। তবে বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমের যেমন বৈচিত্র্যতা এসেছে পাঠকেরও বৈচিত্র্যতা এসেছে। একই সংবাদ ভিন্নভাবে উপস্থাপন বা একটু আলাদা লেখনী বা চৌকস উপস্থাপনা পাঠকের নজর কেড়ে নেয়। যা এখনকার গণমাধ্যমগুলো করছে। শুধু সংবাদই অবশ্য প্রধান মাপকাঠি নয় একটি মূলধারার অনলাইন দৈনিকের। অন্যান্য পাতা যেমন মতামতের পাতাটির কথাই বলা যাক। এ সময়ের প্রিন্ট দৈনিকগুলো এবং অনেক অনলাইন গণমাধ্যম অভিজ্ঞ কলামিষ্টদের সাথে সাথে উঠতি তারুণ্যকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তারা ভালো লিখছে। নতুন নুতন বিশ্লেষণ করছে। সুতরাং তাদের মানসম্মত লেখাগুলোও প্রকাশ করতে হবে। এর ফলে এক শ্রেণির তরুণের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে। আবার সাহিত্যের কথাই আসি।
সাহিত্যেও নতুন প্রতিভাবান লেখকদের তুলে আনার সুযোগ রয়েছে। এর পরিধি আরও বড় করতে হবে। যদিও সাহিত্যে মানের সাথে কোনো আপোষ চলবে না। কিন্তু বিস্তৃত না হলে সেটাও শুভ হবে না। যেমন- বিভিন্ন সময় গল্প বা কবিতা বা ছড়া আহ্বান করা যেতে পারে। অর্থাৎ পাঠকদের কাছে পৌছাতে হলে পাঠক সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ নিতে হবে। এর মধ্য থেকেই আগামীর ভালো লেখক উঠে আসবে। তার অগ্রদূত হবে সারাবাংলা। অন্যান্য বিভাগের ক্ষেত্রেও একইভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে সবকিছুর ওপর সংবাদের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে সবচেয়ে বেশি। বর্তমান সময় প্রতিযোগিতামূলক। একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সবার আগে সঠিক তথ্যে প্রকাশ করার প্রতিযোগিতা থাকে। সেই প্রতিযোগিতায় টিকতে হবে। যদিও কাজটি কঠিন। কিন্তু এটা গণমাধ্যমগুলো করছে। সুতরাং এখানে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। যাই হোক শেষ পর্যন্ত সব বাধা অতিক্রম করে সারাবাংলা এগিয়ে যাক পাঠকের হৃদয় জয় করে- এ শুভ কামনা রইলো।
লেখক: শিক্ষক ও কলামিষ্ট
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি