সৌভাগ্যের বরপুত্র
২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৩১
সদ্য সমাপ্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে টানা তৃতীয় বার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন ওবায়দুল কাদের। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে একটি আলোচিত ও তুমুল সক্রিয় রাজনীতিকের নাম ওবায়দুল কাদের। সেই যে স্কুলজীবনে রাজনীতির অনিশ্চিত ট্রেনে উঠেছিলেন সেই ট্রেন এখনও ছুটে চলেছেন নিরন্তরভ গতিতে। গতানুগতিক রাজনীতির ডামাডোলে শিল্প সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে রাজনীতির মাঠে স্নিগ্ধ, সতেজ, শৈল্পিক, সৃজনশীল ও নান্দনিকতার বহুমাত্রিক প্রতিভা বিচ্ছুরিত করে নিজেকে এখনও সমানতালে মেলে ধরছেন যিনি, তিনি ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়া সাধারণ সম্পাদক। এমন সৌভাগ্যের মালা বংগবন্ধুর পর তারই গলায় ঝুলেছে। বঙ্গবন্ধুর পর আর কেউ তিনবার দলের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেনি। ওবায়দুল কাদের শুধু ক্ষমতাসীন দলের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী মন্ত্রী হিসেবে নয় বিগত পঞ্চাশ বছরের রাজনীতির অঙ্গনের নিরবচ্ছিন্ন এক সৃজনশীল যোদ্ধার নাম। রাজনীতির মাঠে মাটি কামড়ে পরে থাকলে শূন্য থেকে যে শীর্ষে যাওয়া যায় তার অন্যতম উদাহরণ ওবায়দুল কাদের।
১৯৫২ সালে জন্ম নেওয়া ওবায়দুল কাদেরের আজকের অবস্থানে উঠে আসার এই দুর্নিবার যাত্রার পথে ফুল বিছানো ছিল না। বরং প্রতি পদে পদে ছিল কাঁটা বিছানো। স্কুলছাত্র অবস্থায় স্বাধিকার আন্দোলনের ছাত্রকর্মী হিসেবে মিছিল স্লোগানে আলোড়িত ছিল কৈশোর। ছাত্রজীবনে তুখোড় মেধাবী ছাত্র ওবায়দুল কাদের উচ্চশিক্ষার প্রারম্ভেই দেশমাতৃকার টানে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধের যাত্রায় বীরদর্পে শরিক হয়েছিলেন। শুধু কি শরিক হয়েছিলেন, যুদ্ধের ময়দানে সম্মুখে থেকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে জন্মস্থানের নিজ থানায় কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে ভবিষ্যৎ সুখের জীবনের কল্পনাবিলাসী মানুষ হিসেবে ঘরে বসে থাকেননি। ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে দেশ স্বাধীনে বীরত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন।
মহান ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামমুখর বছরে জন্ম কি না সে জন্যই ছাত্রজীবনে এক প্রতিশ্রতিশীল চৌকস ছাত্রনেতায় পরিণত হয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। সুমহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বদানকারী তথা উপমাহাদেশের বৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন কর্মী থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকান্ডের পর অবৈধ ক্ষমতা দখলদার খুনি মোশতাক-জিয়াদের রোষানলে পড়ে আড়াই বছর তাকে কারাগারে থাকতে হয়েছিল। সেই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ দুঃসময়ে জেলখানায় থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছেন অকুতোভয় চিত্তে। সামরিক জান্তা জিয়ার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করেছিলেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে। পুরো ছাত্রনেতৃত্বের সময়টা যেমন ছিল গৌরবোজ্জ্বল তেমনি ছিল এক বিষাদে ভরা। জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে জাতীয় রাজনীতিতে পদার্পণ করেছিলেন রাজনীতির মাঠে সাংবাদিক, গণমাধ্যম, সৃজনশীল, সৃষ্টিশীল মানুষের প্রিয়মুখ ওবায়দুল কাদের। রাজনীতির মাঠের পক্ষ, প্রতিপক্ষ এমনকি বিপরীত মেরুর কট্টর বিরোধিতাকারীকে নিজস্ব শিল্পিত ঢঙে মোকাবিলা করার এক নিপুণ কারিগরের নাম ওবায়দুল কাদের।
পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টের বিয়োগব্যথাকে বুকে নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে অন্ধকারাচ্ছন্ন বাংলাদেশের আলোকবর্তিকা হয়ে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা যেদিন দেশে পা দিয়েছিলেন সেদিন থেকে অদ্যাবধি দলীয় সভাপতির আস্থাভাজন সহকর্মী হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন তিনি। একজন রাজনৈতিক নেতা বা কর্মীর সবচেয়ে বড় যোগ্যতা তার নেতার প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাস, যা ওবায়দুল কাদের নিষ্ঠার সঙ্গে রেখে যাচ্ছেন। দলীয় সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যখন যেভাবে, যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা সক্রিয় ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করে চলেছেন। সেই যে ছাত্ররাজনীতি শেষ হওয়ার পর আশির দশকের মাঝামাঝি জাতীয় রাজনীতিতে পদার্পণ করে নিজ যোগ্যতায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে স্থান করে নিয়েছিলেন তা দিনে দিনে উন্নীত হয়ে আজকে দলের কার্যক্রমের জায়গা থেকে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সাধারণ সম্পাদকের সম্মানজনক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। একজন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা নেতার জন্য এটা একটা বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার সব সরকারে মন্ত্রীরূপে দায়িত্ব পালন করার একমাত্র বিরল সৌভাগ্যবানের নাম ওবায়দুল কাদের। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে অত্যন্ত সততা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রীড়া ক্ষেত্রে দৃশ্যমান উন্নয়ন ও ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিশ্বমানে জায়গা করে নেওয়া পুরো ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক হিসেবে নেতৃত্বটা তার দেওয়া।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে ওয়ানডে ও টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার প্রথম সরকারের সফল প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনেও তিনি সমান যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর একুশ বছর অপসংস্কৃতির ধারক বাহক ও পৃষ্ঠপোষকরা উপর্যুপরি ক্ষমতায় থাকার কারণে বাংলাদেশে যে সংস্কৃতির বন্ধ্যত্ব সৃষ্টি হয়েছিল তা উপড়ে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাঙালির শুদ্ধ সংস্কৃতির বিকাশ রচিত হয়েছিল সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তারই নেতৃত্বে।
একজন আজীবন শিল্প সংস্কৃতিবান্ধব মানুষ বা সংগঠক হিসেবে তারই নেতৃত্বে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন সে সময় প্রাণ ফিরে পেয়েছিল। জীবনের প্রথম একজন প্রবল প্রতিপত্তিসমৃদ্ধ রাজনীতিককে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এসে দুটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সততা, নিষ্ঠা ও সফলভাবে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য সহকর্মীর নাম ওবায়দুল কাদের। কী মন্ত্রী কী দলের নেতা সবসময় সমান তালে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে নিজেকে মেলে ধরেছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে রাজপথের আন্দোলনের সঙ্গে সমান তালে নিজের কলম চালিয়েছেন। দলের নেতার পাশাপাশি একটি জাতীয় দৈনিকের সহকারী সম্পাদক হিসেবে স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে লিখে জনমত তৈরিতে ভুমিকা রেখেছেন। রাজনীতিক হিসেবে তো বটেই একজন লেখক হিসেবেও তিনি জনপ্রিয়। দল বিরোধী দলে থাকার সময় বুক টান করে নেতৃত্ব দেওয়া বা কলম চালানো এত সহজ ছিল না। সুযোগ নিয়ে বিত্ত-বৈভবের বিলাসী জীবনকে তুচ্ছ করে সংগ্রাম আর বিপদকে স্বেচ্ছায় সঙ্গী করে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আপসহীনভাবে সামনে থেকে লড়ে গেছেন। তৎকালীন স্বৈরশাসকদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন কিন্তু রাজপথ ছেড়ে যাননি কখনও। দলীয় সভাপতির জীবনহানির চক্রান্ত করেছে শাসকরা, মৃত্যুভয় নিয়ে তবুও বিশ্বলস্ততার সঙ্গে পাশেই থেকেছেন।
২০০১ সালের নির্বাচনে চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দেওয়ার পর দেশে জামায়াত-বিএনপির অশুভ রাজনীতি শুরু করেছিল তার প্রথম ও প্রধান শিকার হয়েছিল আওয়ামী লীগ ও তার প্রধান শেখ হাসিনা। সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিপীড়নের স্ট্রিমরোলার চলছিল যখন তখনও ওই দুঃশাসন মোকাবিলায় নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজপথে থেকে তার মোকাবিলা করেছেন সাহসিকতার সঙ্গে। তাইতো ২০০৪ সালে একুশে আগস্ট খালেদা-তারেকের তত্ত¡াবধানে চালানো আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চক্রান্তে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অন্য নেতাদের সঙ্গে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। এখনও সেই স্পিন্টারের ভয়াবহ যন্ত্রণা তাকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। যে হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী জীবন দিয়েছিলেন। সে সময়ে খালেদা-নিজামী সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে দাবি আদায়ে সরব ছিলেন ওবায়দুল কাদের। খালেদা জিয়ার সরকারের বিদায়ের পর তারই অজ্ঞাবহ রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ নিয়ে জাতির ঘাড়ে চেপে বসা এক এগারোর জরুরি সরকারের সময় মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার চরম অন্যায়ভাবে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়। শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহকর্মী হিসেবে দলের কাজে সক্রিয় অন্য নেতাদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরকেও গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ ও অমানসিক নির্যাতন করে। টানা সতেরো মাস কারা যন্ত্রণার পর মুক্তি লাভ করেন।
ক্ষমতার লোভে এক-এগারোর সরকার জনগণের পালস বুঝতে পেরে নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট বিজয় লাভ করে। এবং জনগণের বিপুল ভোটে বিজয়ী নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নবযাত্রা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনা দলে ও সরকারের কাজে দৃশ্যমান পরিবর্তন নিয়ে আসেন। বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করে। পাশাপাশি কুচক্রীরা চক্রান্তও অব্যাহত রাখে। সব ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর ও একাত্তরের খুনিদের বিচারের কাজ শুরুর সঙ্গে দেশকে মেগা উন্নয়নের পথে যখন যাত্রা সূচিত করে তখনও সেই যাত্রার শক্তিশালী সহযাত্রী হন ওবায়দুল কাদের। যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সব চক্রান্তকে পায়ে ঠেলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নের অগ্নিমশাল নিজের কাঁধে তুলে নেন। বাংলাদেশকে সড়ক যোগাযোগের এক নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়ার মহাপরিকল্পনা হাতে নেন। শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পূর্ণ বাস্তবায়নের কাজ তার হাত ধরেই সফল ভাবে সমাপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশ তো বটেই দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার হাতেই শুরু। এই স্বপ্নযাত্রা এ বছরেই সুসম্পন্ন হবে। তার হাত ধরেই যাত্রা শুরু স্বপ্নের মেট্রোরেল অ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। যা বাংলাদেশে প্রথম।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে দেশব্যাপী ঝড়ের গতিতে ছুটে চলা ওবায়দুল কাদেরর ওপর যখন দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পিত হয় তখনও মন্ত্রণালয়ের কাজে সমান তালে দলের কাজ চলতে থাকে। নিজে দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়ান। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে সুস্থ থাকলে ও দেশে থাকলে এমন একদিনও যায়নি যেদিন তিনি দলীয় কার্যালয়ে বসেননি। কোনো রাজনৈতিক দলের বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের দলীয় কাজে এমন সময় দেওয়ার নজির বাংলাদেশে নাই। এখানেও ওবায়দুল কাদের ব্যতিক্রম ও অনন্য। নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের ত্রুটি বিচ্যুতি ক্ষেত্র বিশেষ করে এমপি মন্ত্রীদের কথা ও কাজের কোনো অসঙ্গতি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এড়িয়ে যাননি বরং তিরস্কার করেছেন। রাজনীতিতে বিরোধী মত পথকে শিল্পিতভাবে মোকাবিলা করে দেশবাসীকে নিজ দলের সাফল্য ও প্রতিপক্ষের কার্যক্রমের অসঙ্গতি প্রায় প্রতিদিন গণমাধ্যমে হাজির করেছেন। মিডিয়াবান্ধব ও সৃজনশীল রাজনীতির অনুপম বৈশিষ্ট্য তাকে অন্য অনেক রাজনীতিক থেকে আলাদা করেছে। চারবার জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সদস্য এবং শেখ হাসিনার সব সরকারে মন্ত্রী হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা ওবায়দুল কাদের সুস্থভাবে যদি এই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষ করতে পারেন তবে তিনিই হবেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সময়ের দায়িত্ব পালনের সৌভাগ্যের অধিকারী কোনো মন্ত্রী এবং অবশ্যই সফল মন্ত্রী। পাশাপাশি টানা তিনবার দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন বংগবন্ধুর পর তারই ভাগ্যে জুটেছে। এক জীবনে এমন সৌভাগ্যের বরপুত্র আর কয়জন হয়। জীবনে যেমন অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন, তেমনি সাফল্যের বরমাল্য তাকে আলোকিত করেছে। আর এসবই তার জীবনের অর্জন, নিঃসন্দেহে সেরা অর্জন। মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের সৌভাগ্য, ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া, দীর্ঘ সময়ে সরকারের মন্ত্রী থাকা, দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্নেহ পাওয়া এবং তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার আদর, শাসন ও স্নেহের পতাকাতলে দীর্ঘদিন পথ চলা কোন অর্জনকে এগিয়ে রাখবেন আপনি? আমরা দলের কর্মী হিসেবে এসব জানতে চাইব না। চাইবো সুস্থভাবে আরও অনেকদিন বেঁচে থেকে দেশ ও দলের জন্য কাজ করুন। মানুষের ভালোবাসাই হোক আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্বল।
লেখক: সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি