Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোভিড-১৯ ও তার নির্ণয় পদ্ধতি


৩০ মার্চ ২০২০ ২১:৩১

নভেল করোনাভাইরাস বা SARS-CoV-2 বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম। চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে সংক্রমিত হয়ে মাত্র চার মাসের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশে। আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৭ লাখ। মৃতের সংখ্যাও ছাড়িয়েছে ৩৫ হাজার। বর্তমানে এ ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এলেও ইউরোপ-আমেরিকা ও এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোতে এর প্রাদুর্ভাব খুব দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। নিকট ভবিষ্যতে এর প্রাদুর্ভাব কমার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

ইংরেজি শব্দ নভেল (Novel)-এর বাংলা অর্থ  ‘নতুন’ বা ‘অভূতপূর্ব’। অর্থাৎ যা আগে ছিল না। জীবাণু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নতুন রোগ ছড়াতে সক্ষম কোনো জীবাণুর ধরণ যদি আগের কোনো জীবাণুর সঙ্গে না মেলে, তখন ওই জীবাণুকে ‘নভেল’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। একই সূত্র ধরে এ বছরের ৭ জানুয়ারি চীনের বিজ্ঞানীরা এই নতুন জীবাণুর জিন বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে দেখতে পান, তীব্র শ্বাসকষ্ট সৃষ্টিকারী এই নতুন জীবাণুর জিন বৈশিষ্ট্য অনেকটাই ২০০২ সালের শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহের জন্য দায়ী করোনাভাইরাস SARS-CoV-এর মতো। তাই তারা জানুয়ারির প্রথম দিকে এর নাম দেন 2019-nCoV। জিনগতভাবে বৈশিষ্ট্যের মিল থাকার কারণে বিশ্বের সকল নতুন ভাইরাসের নামকরণ নিশ্চিতকারী সংস্থা International Committee on Taxonomy of Viruses (ICTV) এই ভাইরাসের ( 2019-nCoV) আনুষ্ঠানিক নাম দেন SARS-CoV-2।

বিজ্ঞাপন

এই ভাইরাসের আবরণের চারপাশে S-প্রোটিন কাঁটার মতো সাজানো থাকে। কোনো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের দ্বিমাত্রিক ছবিতে এটি দেখায় অনেকটা ‘ক্রাউন’-এর মতো, যাকে আবার ল্যাটিন ভাষায় বলা হয় ‘করোনা’। ফলে এই গোত্রের ভাইরাসকে করোনাভাইরাস বলা হয়। এখন পর্যন্ত মানবদেহে সংক্রমণ করতে পারে— এমন সাত ধরনের করোনাভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একবিংশ শতাব্দীতেই প্রাণনাশক তিনটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বিশ্ববাসী। এই তিনটি ভাইরাসের মধ্যে ২০০২ সালে চীনের গুয়াংডং রাজ্যে প্রথম যে করোনাভাইরাসে (SARS-CoV) ছড়িয়ে পড়ে, তার মাধ্যমে সৃষ্ট রোগ সারাবিশ্বে SARS নামে পরিচিতি পায়। এতে আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে প্রায় ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়। দ্বিতীয় MERS-CoV নামের করোনাভাইরাসটি বিশ্বকে আক্রমণ করে ২০১২ সালে, সৌদি আরবে। উট থেকে মানুষের মাঝে সংক্রমিত হয় এই ভাইরাস। এর ফলে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করা হয় MERS। এতে প্রায় চার শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়, যার বেশিরভাগই ছিলেন সৌদি আরবের নাগরিক। ২০১২ সালের পরেও ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়াতে MERS-CoV ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া ২০১৮ সালে সৌদি আরবে ফের এই ভাইরাসের কারণে ৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। MERS রোগের সংক্রমণকারী ভাইরাসের উৎপত্তি মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে শুরু হয় বলে এর নামকরণ করা হয় Middle East respiratory syndrome-related coronavirus বা সংক্ষেপে MERS-CoV।

একবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় SARS-CoV-2 করোনা ভাইরাসটি বর্তমানে সারাবিশ্বকে এক অস্বস্তিকর আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত এই তিনটি ভাইরাস আক্রান্ত ব্যাক্তির শরীরে তিনটি একই ধরনের প্রধান উপসর্গ (জ্বর, শুকনো কাশি ও শ্বাসকষ্ট) দেখা দিলেও সংক্রমণের দিক থেকে SARS ও MERS-এর থেকে COVID-19-এর ক্ষমতা অনেক বেশি। আক্রান্ত ব্যাক্তির সংখ্যার সঙ্গে মৃতের হার তুলনা করলেও দেখা যায়, COVID-19 আক্রান্ত মৃত্যুর হার (শতকরা প্রায় ৫ ভাগ) SARS ও MERS আক্রান্ত মৃত্যুর হারের (যথাক্রমে শতকরা ১০ ও ৩৯ ভাগ) তুলনায় অনেক কম। কিন্তু এই মুহূর্তে সারাবিশ্বে যেভাবে COVID-19 ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে করে এটি আগের দুই ভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি প্রাণঘাতী বলে প্রমাণ রাখছে।

কোভিড-১৯ নির্ণয়

SARS-CoV-2-এর সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হচ্ছে। তারপরও মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতির পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশ্বকে। এই ভাইরাস ও এর জিনগত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কোনো পূর্বধারণা না থাকায় সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীরা যেন অকূল পাথারে পড়েছেন। বর্তমানে যে কয়েকটি পদ্ধতিতে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ধারণ করা হয়, তার মধ্যে রিয়েল টাইম  আরটি-পিসিআর (real time RT-PCR) সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি কটন সোয়াবের মাধ্যমে শ্বাসনালীর ওপরের অংশের নমুনার জন্য নাকের ছিদ্র, নাকের ছিদ্রের ভেতরের অংশ ও স্বরযন্ত্রের ওপরের অংশ থেকে নিঃসৃত রস এবং শ্বাসনালীর নিচের অংশের নমুনা হিসাবে থুথু, শ্বাসনালী নিঃসৃত রস ও ফুসফুসের লেভেজ করে তরল নিঃসরণ সংগ্রহ করা হয়। ওই নমুনায় ভাইরাসকে (যদি থাকে) ভেঙে তার জিনের ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে তা রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে কয়েক হাজার থেকে কয়েক মিলিয়ন গুণ বৃদ্ধি করে তার উপস্থিতি দেখা হয়। যদি পরীক্ষিত নমুনায় SARS-CoV-2 উপস্থিতি থাকে, তাহলে শুধুই তার জিনের বৃদ্ধির বিষয়টি দেখা যায়। বাকি অন্য ছয় ধরনের করোনাভাইরাস ওই নমুনায় যদি উপস্থিত থেকেও থাকে, তাহলেও তা এই পরীক্ষায় জিনের বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হবে না। তাই এটি SARS-CoV-2 নির্ণয়ের জন্য খুবই উপযোগী একটি পদ্ধতি। যেহেতু SARS-CoV-2 ভাইরাস ফুসফুসের টাইপ-টু এলভিওলার কোষে তাদের বংশবৃদ্ধি করে এবং তিন থেকে পাঁচ দিন পরে সেখান থেকে নিঃসৃত হয়, তাই প্রাথমিক পর্যায়ে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নাও পাওয়া যেতে পারে। তাই প্রথমবার ভাইরাসের উপস্থিতি না পেলে পরবর্তী দিনগুলোতে আবার নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করার দরকার হয়। এসব নমুনাগুলো ছাড়াও রক্ত ও মলের নমুনা থেকেও এই পদ্ধতিতে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়, যদিও তার নিশ্চয়তা খুবই কম (যথাক্রমে শতকরা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ও ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ)।

করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তের এই আরটি-পিসিআর পদ্ধতি খুবই সময়সাধ্য, যাতে ৭ ঘণ্টা থেকে এক দিন পর্যন্ত লাগতে পারে এবং অবশ্যই অন্তত বায়োসেফটি ল্যাব লেভেল-২-এর ঊর্ধ্বে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পরীক্ষক দ্বারা করতে হবে। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে এই পরীক্ষা সম্পন্নকারীকে অবশ্যই বায়োসেফটি নিরাপত্তা পোশাক পরতে হয়। এই পদ্ধতিটি জার্মানি, হংকং, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে চীনের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত SARS-CoV-2 ভাইরাসের জিন বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করেন, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দ্বারা একমাত্র স্বীকৃত পদ্ধতি।

দ্বিতীয় যে পদ্ধতিটি বর্তমানে খুবই আলোচিত তা হলো SARS-CoV-2 ভাইরাসের অ্যান্টিবডি নির্ণয়ের পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একজন আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্তে SARS-CoV-2-এর জন্য নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি IgM ও IgG উপস্থিতি নির্ধারণ করে। সাধারণত কোনো ভাইরাস কারো শরীরে প্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং সেই অ্যান্টিবডি আক্রমণকারী ভাইরাসকে মেরে ফেলে। একইভাবে SARS-CoV-2 আক্রান্ত ব্যাক্তির শরীরেও অ্যান্টিবডি IgM ও IgG তৈরি হয়। কিন্তু SARS-CoV-2-এর ক্ষেত্রে এই ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিন পরে তার রক্তে IgM ও ১২ দিন পরে IgG অ্যান্টিবডির উপস্থিতি দেখা দেয়। এই পদ্ধতিটি খুবই সহজ, খরচও কম এবং মাত্র ১৫ মিনিটেই এই পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু এই পদ্ধতি ব্যবহারের কয়েকটি জটিল সমস্যা রয়েছে। যেহেতু আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্তে IgM ও IgG উপস্থিতি পরিলক্ষিত হতে রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়া দিন থেকে ১০ দিনের বেশি সময় লাগে, তাই উপসর্গ প্রকাশের প্রাথমিক পর্যায়ে এই পরীক্ষা সঠিক ফল দেয় না। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে SARS-CoV-2 মুক্ত ধরে নিয়ে আর আইসোলেশনে থাকেন না। ফলে তার কাছ থেকে অন্য সুস্থ মানুষের মাঝে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটনোর আশঙ্কা বেড়ে যায়।

এ কারণে সারাবিশ্বে অনেক কোম্পানি এই পরীক্ষার কিট তৈরি করে বিক্রি করলেও কোনো দেশের কর্তৃপক্ষই এই পদ্ধতি ব্যবহারের স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু খরচ ও সময় স্বল্পতার কথা বিবেচনা করে কোয়ারেনটাইনে থাকা COVID-19-এর লক্ষণ পরিলক্ষিত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে SARS-CoV-2-এর উপস্থিতি নির্ণয় করা সম্ভব। তবে এই পদ্ধতিতে নির্ণীত পজিটিভ ব্যক্তির নমুনা থেকে রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে তার শরীরে SARS-CoV-2 উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। কারণ সোস্যাল ডিসটেন্সিং হোক আর কোয়ারেনটাইন, একমাত্র পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হলেই সফলতা পাওয়া সম্ভব।

করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তের আরও কয়েকটি পদ্ধতি থাকলেও খরচ ও সময় বিবেচনায় সেগুলো ঠিক ব্যবহারের উপযোগী নয়। সেগুলো নিয়ে আলোচনাও তাই বাহুল্য। তবে সম্প্রতি জার্মানির বশ (Bosch) কোম্পানি একটি নতুন SARS-CoV-2 নির্ণয় কিটের কথা ঘোষণা করেছে। এই কিট রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআরের মতোই নমুনা সংগ্রহ করে তাদের নির্মিত কার্টিজে (যেখানে প্রয়োজনীয় সব উপাদান আগে থেকেই রাখা থাকবে) সেই নমুনা যোগ করে তাদের তৈরি ভিভালাইটিক অ্যানালাইজারের (একটি স্বয়ংক্রিয় বিশ্লেষক যন্ত্র) মাধ্যমে মাত্র তিন ঘণ্টায় এই ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করতে সক্ষম।

এখন প্রশ্ন হলো— করোনা টেস্ট করা জরুরি কি না।  বিজ্ঞানীরা যে উত্তর দিচ্ছেন এই প্রশ্নের, তা হলো— হ্যাঁ, অবশ্যই জরুরি। কারণ করোনার বিরুদ্ধে যদি জিততে হয়, তবে আপনাকে জানতে হবে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি কী পরিমাণে আছেন ও তাদের সংস্পর্শে কারা এসেছেন। তাহলেই কেবল করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের আমরা নিশ্চিতভাবে আইসোলেশনে নিতে পারব এবং যারা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের আমরা কোয়ারেনটাইন করতে পারব। তবেই আমরা আক্রান্ত ও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের থেকে বাকিদের আলাদা করতে পারব। করোনাভাইরাসের যে চরিত্র, ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির শরীরে ছড়ায়— সেটা এভাবেই রুখে দেওয়া সম্ভব। তাই অবশ্যই আমাদের বেশি বেশি পরীক্ষা করতে হবে। এর বিকল্প নেই।

মনে রাখতে হবে, নভেল করোনাভাইরাস একটি রহস্যময় ভাইরাস। এই ভাইরাসের গতি-প্রকৃতি এখনো আমাদের জানা নেই। তাই এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার এখন পর্যন্ত একমাত্র উপায় হলো এর থেকে দূরে থাকা। তাই সরকারের বিধিনিষেধ মেনে চলুন। বিশেষজ্ঞদের ওপর আস্থা রাখুন— পরামর্শ মেনে চলুন। এই ক’টা দিন বাড়িতেেই থাকুন। সুস্থ থাকুন। মনে রাখবেন, অন্ধকার রাতের পরেই রৌদ্রজ্জ্বল দিনের শুরু।

লেখক: চিকিৎসক

সূত্র:

Centers for Disease Control and Prevention: CDC
World Health Organization: WHO
Handbook of COVID-19 Prevention and treatment.

আরও পড়ুন- কোভিড-১৯ এর উৎপত্তি ও বাহক

ভুল ফলাফল দেয় চীনের র‍্যাপিড টেস্টিং কিট— অভিযোগ দেশে দেশে

কোভিড-১৯ চিকিৎসায় অনুমোদন পাচ্ছে জাপানের ‘অ্যাভিগান’

আরটি-পিসিআর করোনা করোনা টেস্ট করোনাভাইরাস করোনাভাইরাস পরীক্ষা কোভিড-১৯ সার্স

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর