সাকিব আল হাসানকে আর কখনোই বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে দিতে দেওয়া হবে না- এমন কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্ট নিয়ে পাল্টাপাল্টি লড়াই চলছিল। এর মধ্যেই এমন কথা বলে দিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
দেশের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের জার্সির পরিচয় বহন করতে দেওয়া, এটা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব না। ইতিপূর্বে এটা আমি বিসিবিকে না বললেও এখন আমার বোর্ডের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে, সাকিব আল হাসান আর কখনো বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারবেন না।’
এর আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও এমন কথা উল্লেখ করে পোস্ট দিয়েছিলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। লিখেছিলেন, ‘ভাইয়া, আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল। আমি শুধু নির্বাচনটাই করেছিলাম, আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতিতে জড়িত হইনি। ইউ নো হু। যার হাত ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত, তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বোর্ডের কর্তারা একাধিকবার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে বললেও তা না করে বরং খুনিদের এনডোর্স করা ছাড়াও শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, মানি লন্ডারিং, ফিন্যান্সিয়াল ফ্রড করা কাউকে কেন শুধু ভালো ক্রিকেটার বলেই পুনর্বাসন করতে হবে? আইন সবার জন্য সমান, ফেস ইট।’
এমন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘যতবার তিনি (সাকিব) দেশে আসার জন্য চেয়েছেন, খেলার জন্য চেয়েছেন, বলেছেন “আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। আমি শুধু এমপি ইলেকশনটা করেছি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি।” কিন্তু আসল সত্যটা তো হচ্ছে, তিনি আসলে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠেভাবে জড়িত, যার প্রমাণ আমরা পেলাম।’
দুদিন ধরে পাল্টাপাল্টি ফেসবুক পোস্ট চলছিল সাকিব আল হাসান ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার মধ্যে। ক্রীড়া উপদেষ্টা প্রমাণ হিসেবে বুঝাতে চেয়েছেন সাকিব আল হাসানের ফেসবুক স্ট্যাটাসকেই। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হওয়া সাকিব গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ থেকে দেশের বাহিরে।
একদিন আগে নিজের ফেরিফাইড ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার সঙ্গে ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘শুভ জন্মদিন আপা’।
পরে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। বাট আই ওয়াজ রাইট। ইন্ড অব দ্য ডিসকাশন।’
এর জবাবে সাকিব আবার ফেসবুকে লিখেন, ‘যাক শেষমেশ কেউ একজন স্বীকার করে নিলেন যে তাঁর জন্য আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না, বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারলাম না!’
আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সংসদ সদস্য হওয়া সাকিবের নামে হত্যা মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে, দুদুকে মামলাও আছে তার বিরুদ্ধে।