নাটকীয় জয়ে শেখ রাসেলকে হারিয়ে ফাইনালে কিংস
২০ নভেম্বর ২০১৮ ২০:৩০
।।স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ নির্ধারিত সময় পেরিয়ে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা চলছিল। ম্যাচে বাকী দুই মিনিট। তখনও গোলের মুখ দেখেনি দু‘দল। অমনি ডি বক্সের অনেক বাইরে ফাঁকা বল পেয়ে যান বিশ্বকাপার ড্যানিয়েল কলিনদ্রেস। বুটের অগ্রভাগ দিয়ে আচমকা শট নিলেন। বল চোখের পলকে গোল বার কাঁপিয়ে দিলো। বার থেকে ফিরতি বলে ছুপা রুস্তম সবুজ পায়ের টোকায় বল জড়িয়ে আনন্দের জোয়াড়ে ভাসলেন।
সেই গোলেই লেখা হলো ম্যাচের ভাগ্য। ১-০ গোলে শেখ রাসেলকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের প্রথমবার অংশ নিয়েই ফাইনালে পা রেখেছে বসুন্ধরা কিংস ক্লাব।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকালে শুরু হওয়া এই ম্যাচ যে রোমাঞ্চকর মুহূর্ত উপহার দিচ্ছে সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। হয়েছেও তাই। ম্যাচজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে অনেকবার। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ঠাসা ম্যাচটায় গোল হতে পারতো হালি খানেক।
৬ মিনিটে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে শেখ রাসেলের উজবেক ফরোয়ার্ড আজিজভ আলিসেরের নেয়া ডান পায়ের শট সরাসরি বসুন্ধরা কিংস গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর হাতে আশ্রয় নিলে গোল পায়নি শেখ রাসেল। তার দুই মিনিট পরই কিংসের আক্রমণ। ফাঁকা পোস্টে বল পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন বসুন্ধরা কিংস-এর ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল। সিক্স ইয়ার্ডের ভেতর থেকে সুফিলের নেয়া শট শেখ রাসেলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা রুখে দেন। ফিরতি বলে মাসুক মিয়া জনির নেয়া শট শেখ রাসেলের নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার আলিসনের গায়ে লেগে ফেরত আসলে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে বসুন্ধরা কিংস।
২৩ মিনিটে আবারও সুযোগ হাতছাড়া করে বসুন্ধরা কিংস। এবার বাম প্রান্তে ডি বক্সের ভেতর থেকে মিডফিল্ডার মো: ইব্রাহিমের নেয়া শট রানা ফিস্ট করে প্রতিহত করলে গোলের দেখা পায়নি অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা। ৩৪ মিনিটে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন কিংসের ডিফেন্ডার ফয়সাল। তার পরিবর্তে মাঠে নামেন ৯নং জার্সিধারী মো: মতিন মিয়া।
হাই ভোল্টেজের প্রথমার্ধ শেষে গোল না পাওয়া দুই দলই পরের অর্ধে আরও আক্রমণাত্বক খেলতে থাকে। ৫৪ মিনিটে কিংসের গোছালো আক্রমণ। ডি বক্সের ভেতরে পাস। ইমন বাবু বল পায়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুর্বল শট নিলে তা ধরতে কষ্ট হয়নি গোলরক্ষক রানার। তার পাঁচ মিনিট পর কলিনদ্রেসের দুর পাল্লার শট বারের একেবারে গা ঘেষে বাইরে চলে যায়। তরুণ নির্ভর দল শেখ রাসেলও পিছিয়ে নেই।
৭২ মিনিটে কর্নার থেকে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যদের আক্রমণ। জিকো বল ঠেকিয়ে দিলে ফিরতি বল দারুণ ভলি শট নেন বিপলু। ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল মাঠের বাইরে।
৮৩ মিনিটে কলিনদ্রেসের কাছ থেকে ডি বক্সের ভেতরে বল পেয়ে গোটরের বোমা শট বারে লেগে ফিরে আসে। প্রতিআক্রমণে মিনিটের মধ্যেই বল বসুন্ধরার রক্ষণে। এবার ব্রাজিলিয়ান রাফায়ালের একক নৈপুণ্য। তবে কাছে গিয়েও শটে জাল জড়াতে পারেননি বল।
নির্ধারিত সময়েও গোলের দেখা নেই। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। ১০২ মিনিটে বসুন্ধরার রক্ষণভাগের ভুলে বল পেয়ে যান শেখ রাসেলের নাম্বার টেন আজিজব। বল পায়ে ডি বক্সের ভেতরে দুর্দান্ত পাস দেন রাফায়ালকে। একেবারে কাছ থেকে সহজ সুযোগ বারের অনেক বাইরে মেরে নষ্ট করেন এই ব্রাজিলিয়ান।
তখন ১১৮ মিনিট। ম্যাচজুড়ে মার্কে থাকা কলিনদ্রেস বল পেলেন ফাঁকায়। দূর থেকেই গতির শট নেন। বল মুহূর্তের মধ্যে বারে লেগে ফিরে আসার সময় শেখ রাসেলের সর্বনাশ ডেকে আনেন সবুজ। বদলি নেমে ইঞ্জুরি নিয়েই কিংসের জয়ের নায়ক হয়ে যান। ফিরতি বলে আলতো টোকায় পরাস্ত করেন রানাকে।
এ জয়ে ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে ফাইনালে দ্বিতীয় দল হিসেবে পা রেখেছে বসুন্ধরা কিংস। ২৩ নভেম্বর টুর্নামেন্টের ফাইনাল একই ভেন্যুতে বিকেলে।
সারাবাংলা/জেএইচ
সারাবাংলা/জেএইচ