বাংলাদেশের ফুটবলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সরব উপস্থিতি
২৭ মে ২০১৯ ১৭:৪১
ঢাকা: ‘পরিশ্রমই সাফল্যের সিড়ি’ প্রবাদটা এখন বাংলাদেশের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে একটি অভ্যস্ততার নাম দাঁড়িয়ে গেছে। ভুটান বিপর্যয়ের পরে দেশের ফুটবলটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ফুটবলারদের দৃঢ় মানসিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের ফসল হিসেবে। এর পেছনে যারা কাজ করেছেন তারা মূলত ‘আনসাং হিরো’। মরচে পড়া অস্ত্রগুলোকে শানিয়ে দিয়েছেন এই আনসাং হিরোরাই।
লাল-সবুজ জাতীয় দলের হয়ে কাজ করা এই আনসাং হিরোরা মূলত বিভিন্ন কোচ। বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইপর্ব উতরাতে এই কোচরা নেমেছেন জামাল-মামুনদের ‘সেরা’ হিসেবে তৈরি করতে। ‘ফুটবল খেলাটাকে চাপ হিসেবে নয় বরং এনজয় করতে পারার’ সেই শারীরিক-মানসিক শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলার কাজই কোচদের।
সেটাই করে যাচ্ছেন দেশের ফুটবল দলের প্রধান কোচ জেমি ডে, সহকারী কোচ স্টুয়ার্ড পল ওয়াটকিস, গোলরক্ষক কোচ রবার্ট অ্যান্ড্রু মিমস ও ফিজিওথেরাপিস্ট সিমন জেমস মল্টবাই। জাতীয় দলের হয়ে কাজ করা এই কোচরা সবাই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলগুলোতে হয় খেলোয়াড় ছিলেন বা কোচ হিসেবে কাজ করেছেন।
সেই অভিজ্ঞতাই মূলত অগ্রাধিকার পেয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় দলে নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে। বিশ্বের সবচেয়ে উত্তেজনার লিগ বলা হয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে (ইপিএল)। হাল সিটি, এভারটন, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটিসহ ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলা এই ফুটবলাররাই এখন লাল-সবুজ জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ।
এশিয়ান গেমসে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের নক আউট পর্বে যাওয়া বা এএফসি চ্যালেঞ্জে প্রথমবার আন্তর্জাতিক জয় তুলে নেয়ার যে শুভযাত্রাটা হয়েছে তার নাম জেমি ডে। ইংল্যান্ড ফুটবল দলের বয়সভিত্তিক দলগুলোতে খেলা ও ইপিএল দল বার্নামাউথে খেলা এই ফুটবলারই গত বছর মে মাসে কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছিল লাল-সবুজদের ডাগ আউটে। তার উপস্থিতিতে দলের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন স্পষ্ট।
এদিকে একই সময়ে সহকারী কোচ হিসেবে জাতীয় দলে যোগ দেয়া স্টুয়ার্ড পল ওয়াটকিসও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের। হাল সিটির কোচের দায়িত্ব পালন করা এই ব্রিটিশ ২০১৮ সালের মে মাস থেকে লাল-সবুজ জাতীয় ফুটবল দলের সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জাতীয় দলের পাশাপাশি তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের যুব দলের ( অনূর্ধ্ব ১৬ ও ১৯)।
জিকো-রানা ও হিমেলদের আরও শানিয়ে নিতে নতুন গোলরক্ষক কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার্স-এভারটন-ম্যান সিটির প্রাক্তন গোলরক্ষক ববি মিমসকে। ইতোমধ্যে দেশের সেরা গোলরক্ষকদের আরও সেরা বানাতে মাঠে নেমে পড়েছেন মিমস।
দেশের ফুটবলে পরিশ্রমী হওয়ার মন্ত্রটা ফুটবলারদের মনে ঢুকিয়ে দিতে কাজ করছেন সিমন জেমস মল্টবাই। অর্থাৎ ফুটবলে শারীরিকভাবে শক্তিশালী ও ফিট থাকাটা যে কতটা দরকার সেই কাজটা করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল হাল সিটির সাবেক এই ফিজিওথেরাপিস্টকে। যদিও এর আগে খেলোয়াড়দের ফিট রাখার কাজটা করে গেছেন দুই বছর আগে মারিও লেমস। এই পর্তুগিজ ফিজিওথেরাপিস্টই এখন ঢাকা আবাহনীর প্রধান কোচের দায়িত্বে।
ফুটবলারদের ফিট হতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের যে কোন বিকল্প নেই সেই মন্ত্রটা কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন মারিও। এখন দেশের ফুটবলাররা তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে শরীর ফিট রাখার কাজে অভ্যস্ত। বিশ্বকাপ প্রাক বাছাইপর্বের লক্ষ্যে থাইল্যান্ডে অবস্থান নেয়া জামাল-মামুন-মতিনরা কোচদের ফুড মেন্যুই মেনে চলছেন।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞতাই দেশের জাতীয় ফুটবলে কাজে লাগবে এমনটাই আশা ফুটবল সমর্থকদের। আশা- তাদের হাতেই মতিনরা বারুদ হবে। প্রাক বাছাইপর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে উত্তীর্ণ হবে।
সারাবাংলা/জেএইচ
আরও পড়ুন-
কষ্টের ফিটনেস ধরে রাখা দায়!
লাল-সবুজ যুবাদের দায়িত্বে হাল সিটির কোচ
নতুন মুখ রাফি-আরিফ, নতুন কোচ ম্যান সিটির তারকা
জেমি ডে ববি মিমস বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল মারিও লেমস স্টুয়ার্ড পল ওয়াটকিস