বিজ্ঞাপন

কষ্টের ফিটনেস ধরে রাখা দায়!

April 13, 2018 | 8:15 pm

জাহিদ-ই-হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট                       

বিজ্ঞাপন

ঢাকাঃ ফুটবলারদের জীবনাচরণটা একটু অন্যরকমই হয়। সাফল্য পেতে বা ধরে রাখতে কতই না কাঠখড় পোড়াতে হয় দিনের পর দিন। শুধু ফুটবলারই নয় সব খেলোয়াড়দের ফিটনেস সচেতন হতে হয়। ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে গিয়ে প্রতিদিন খাদ্যাভাসে পরিবর্তন এনে তা নিয়মিত করতে হয়।

দেশের ফুটবলাররাও সেই পথেই হেটেছিলেন। ভুটান ধাক্কার ১৭ মাস পর মাঠে নেমেছিলেন মামুন-জামালরা। তাই লাওসের আন্তর্জাতিক ম্যাচকে সামনে রেখে দলে বেশি বেতনে পর্তুগিজের ফিটনেস কোচকেও অন্তর্ভূক্ত করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।

ফিটনেস কোচও বসে ছিলেন না। ঘরোয়া ফুটবলারদের ফিটনেস ঘাটতি পূরণে যা যা করার তাই করেছেন। খাদ্যাভাসে পরিবর্তন এনে মামুনদের দিয়ে সেটা অভ্যস্ত করেছেন। খাবারের মধ্যে নিয়ে এসেছেন পার্থক্য। দেশি খাবারের সঙ্গে স্ট্যামিনা বাড়ে এমন খাবারের মেন্যু সংযুক্ত করছেন।

বিজ্ঞাপন

তাতে অভ্যস্তও হয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের সদস্যরা। কি চমৎকার শরীরও বানিয়েছেন তারা। পরিশ্রম আর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে থাকলে সেটা সম্ভব।

লাওস ম্যাচেও তার প্রভাব দেখা গিয়েছে। অতীতে যেখানে ফিটনেস ঘাটতির ফলে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ঝিমিয়ে যেত পুরো দল। সেখানে এই ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধেই প্রত্যাবর্তন আর ক্লান্তিহীন ফুটবল উপহার দিয়েছে জাফর-সুফীল-জীবনরা। দেশের ফুটবলের অনবদ্য কাব্য রচনা করেছেন দেশের ফুটবলাররা।

বিজ্ঞাপন

যখনই দেশের মানুষ এই দল নিয়ে আশার বুক বাঁধতে লাগলেন, তখনই দেশের ফুটবলে বড় ধাক্কা আসলো। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের হেড কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ড চলে গেছেন। সাথে গোলরক্ষক কোচ জেনস ব্রাউনও।

টিকে আছে শুধু ফিটনেস কোচ মারিও লেমস। আগস্টে বাংলাদেশ অংশ নেবে এশিয়ান গেমসে। সেপ্টেম্বরে সাফ ফুটবল। তবে, এভাবে হেড কোচবিহীন চললে আশাব্যঞ্জক রেজাল্ট ধরে রাখা যাবে না। দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে পরবর্তী হেড কোচ। সাথে অতি গুরুত্বপূর্ণ গোলরক্ষক কোচও। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ ন্যাশনাল টিমস কমিটির সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয় নি। কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে গেছে মাঝপথেই।

সেই ফিটনেস কোচই এখন থেকে গেছেন দেশে। কিন্তু তাকে কাজ লাগানোর উপায় কই। ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না প্রধান কোচ না থাকায়। তাহলে এতো কষ্টে গড়া ফুটবলারদের ফিটনেস ধরে রাখা যাবে কিভাবে?

শুধু শুধু বেতন দিয়ে পুষে রাখতে হচ্ছে ফিটনেস কোচকে!

বিজ্ঞাপন

এখন নতুন কোচ যিনিই হোক না কেন রোজার আগে জাতীয় দলের অনুশীলন শুরু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। মে মাস পর্যন্ত ঢাকা আবাহনীর এএফসি কাপের খেলা। নেই কোনও লিগও। তাছাড়া জুলাই পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ নেই। যে কারণে এই মুহূর্তে ক্যাম্প হবে না।

তাহলে ফিটনেস ধরে রাখবে কিভাবে মামুনরা?

এদিকে ভুটান দল বাংলাদেশকে তাদের দেশে গিয়ে খেলতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে বাফুফে সূত্রে জানা গেছে। আর মঙ্গোলিয়া আসতে চায়। তবে ফিলিস্তিন অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু কাপে খেলবে বলে বাফুফেকে আশ্বস্ত করেছে। ফেডারেশন এখন এই আসরের জন্য দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানাতে শুরু করেছে।

বাফুফের সাথে ৬ জুন পর্যন্ত চুক্তি ছিল অ্যান্ড্রু ওর্ডের। কিন্তু চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই তিনি চলে যান থাই ক্লাবে। মে মাসে চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল জেমস ব্রাউন এবং মারিও লেমসের। তাদের সাথে তিন মাসের চুক্তি। কিন্তু মূলত বেশি অর্থের লোভে দুই কোচ বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়েন।

কোচের আসা যাওয়ার মধ্যে মধ্যকালীন সময়ে ক্ষতিটা হয়েছে ফুটবলারদের। বসে বসে কষ্টে অর্জিত সেই ফিটনেসে ব্যঘাত ঘটছে।

এদিকে বাংলাদেশ দলের পর্তুগিজ ট্রেইনার মারিও লেমসও চান কাজ করতে। তিনি জানান, আমারও অফার ছিল থাইল্যান্ডের ক্লাব কোচ হওয়ার। বেতনও আমি বেশি পেতাম। কিন্তু আমি বাফুফের সাথে চুক্তিকে সম্মান করি। আমার সাথে বাংলাদেশের চুক্তি শেষ হয়ে যায়নি। তাই আমি দেশেই থেকে যাচ্ছি। তাছাড়া বাংলাদেশের ফুটবলারদের সাথে কাজ করতে চাই আমি। তাদের মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।

কিন্তু এ সম্ভাবনা শঙ্কায় রূপ নিচ্ছে। এতো পরিশ্রমের ফল বা কষ্টার্জিত ফিটনেস ধরে রাখাই এখন দায়! এগিয়ে আসতে হবে বাফুফেকেই এমনটাই আশা ফুটবল সংশ্লিষ্টদের। ন্যাশনাল টিমস কমিটির কো চেয়ারম্যান তাবিথ আউয়াল যেমনটা বলেছেন, ‘এই সময়ে তাদের ফিটনেস ধরে রাখা কঠিন হবে।’

সারাবাংলা/জেএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন