ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ময়দানের যত বিতর্ক
১৬ জুন ২০১৯ ১২:৩৩
ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট বিশ্বের ধ্রুপদী লড়াইয়ের সব থেকে বড় লড়াইয়ের একটি। উপমাহদেশের দুই ক্রিকেট পরাশক্তির লড়াইটা উপমহাদেশের সেরা তো বটেই, ক্রিকেট বিশ্বে এমন লড়াইয়ের দেখা মেলা ভার।
ভারত পাকিস্তানের ম্যাচ ঘিরে মাঠের বাইরে থেকে শুরু করে মাঠের মধ্যেও তৈরি হয় নানান তর্ক-বিতর্কের। এ যেন সাপে-নেউলে সম্পর্ক দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের। দু’দলের মোট ১৩১ বার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা হয়েছে আর সেখানে জন্ম কত শত বিতর্কের। তবে সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে কিছু বিতর্ক।
জাভেদ মিয়াঁদাদ আর কিরণ মোরের ১৯৯২ সালের বিতর্ক, ভেঙ্কেটেশ প্রসাদ আর আমির সোহেলের ১৯৯৬ বিশ্বকাপের উত্তপ্ত মুহূর্ত, ২০০৩ সালে আফ্রিদি আর গৌতম গম্ভীরের বিতর্ক ২০১০ সালে গম্ভীর আর কামরান আকমালের বিতর্ক আর শোয়েব আখতার এবং হরভজন সিংয়ের মধ্যকার বিতর্ক তো আছেই।
জাভেদ মিয়াঁদাদ আর কিরণ মোর:
১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে মুখোমুখি হয় ভারত এবং পাকিস্তান। আর সেখান থেকে শুরু যতো বিতর্কের। বিশ্বকাপের সে ম্যাচে ভারতীয় উইকেটরক্ষক কিরণ মোর আউটের জন্য অত্যধিক আবেদন করছিলেন। আর এ কারণেই বেশ বিরক্ত হচ্ছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। ক্রিকেট বিশ্বে এখন পর্যন্ত মানসিকভাবে যতো ক্রিকেটারকে শক্তিশালী ধরা হয় জাভেদ তাদের মধ্যে অন্যতম সেরা।
অতিরিক্ত আবেদনের কারণে জাভেদ একটা সময় কিরণকে কিছু কথা বলে আর আম্পারারের কাছেও নালিশ করেন তিনি। এরপরেও কিরণের আবেদন থামেনি। তবে মিয়াঁদাদ আসলেন নতুন এক ফন্দি নিয়ে। আম্পারকে নালিশ করার পরের বলেই দৌড়ে দুই রান নেন জাভেদ। আর বল স্ট্যাম্পে লাগিয়ে আবারও আবেদন কিরণের আর এতেই কিরণকে ব্যাঙ্গ করে স্ট্যাম্পের পাশে গিয়ে লাফানো শুরু করেন জাভেদ। আর এই কান্ড দেখে সবাই হতবাক হয়ে যান।
ভেঙ্কেটেশ আর আমির সোহেলের বিতর্ক:
১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে ভারতের চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে আবারও দেখা দুই দলের। এ ম্যাচে ২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করছিলো পাকিস্তান। আর পাকিস্তানের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন আমির সোহেল। ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করার পর ভারতীয় পেসার ভেঙ্কেটেশ প্রসাদের বলে দারুণ এক কভার ড্রাইভ করেন সোহেল। আর এরপরেই দু’জন বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সোহেল ভেঙ্কেটেশকে ব্যাট উঁচিয়ে ইঙ্গিত দিয়ে বল আনতে বলে।
তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়। পরের বলেই আমির সোহেলকে বোল্ড করে বুনো উল্লাসে ফেটে পড়েন ভেঙ্কেটেশ।
আফ্রিদি আর গম্ভীরের বিতর্ক:
২০০৭ সালে কানপুরে গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচে ভারতীয় ওপেনিং ব্যাটসম্যান গৌতম গম্ভীর এবং শাহীদ আফ্রিদি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। আফ্রিদিকে বাউন্ডারি মারার পর দু’জন উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। এরপরের বলেই রান নেওয়ার সময় আফ্রিদির সাথে ধাক্কা লাগে গম্ভীরের আর এর পরেই দুইজন হিন্দীতে বেশ উত্তপ্ত শব্দ ব্যবহার করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয় আম্পায়ারদের।
গম্ভীর আকমল বিতর্ক:
২০১০ সালে এশিয়া কাপের চতুর্থ ম্যাচে গৌতম গম্ভীর আর কামরান আকমাল জড়িয়ে পড়েন বিতর্কে। সাইদ আজমলের করা বলে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন আকমল। আর আবেদনটা এতটাই জোরালো ছিল যে গম্ভীর এতে ক্ষেপে ওঠেন। যদিও শেষ পর্যন্ত আম্পায়ার আউট দেয়নি। তবে গম্ভীর তেড়ে যান আকমলের দিকে।
বিরতির সময়ে সেই বিতর্ক গড়ায় আরও এক ধাপ সামনে। গম্ভীর আর আকমল একে অপরের দিকে তেড়ে যায় এবং বেশ কিছু উত্তপ্ত বাক্য আদান প্রদান করেন দু’জন। শেষ পর্যন্ত মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং মাঠের দুই আম্পায়ার মিলে দুইজনকে আলাদা করেন।
হারভজন এবং শোয়েব আখতারের বিতর্ক:
কামরান আকমল এবং গৌতম গম্ভীর যে ম্যাচে একে অপরের বিপক্ষে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন সে ম্যাচেই হরভজন এবং শোয়েব আখতারও জড়িয়ে পড়েন বিতর্কে। ২৬৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভারে যখন ভারতের দরকার ৭ রান। তখন পিচে নেই কোনো নামকরা ব্যাটসম্যান। এমন অবস্থায় বোলিং করতে আসেন শোয়েব আখতার। একটি বল যখন ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হয় হরভজন তখন তাকে উত্যক্ত করার জন্য কিছু কথা বলেন গতি তারকা শোয়েব আখতার। আর হরভজনও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। তিনিও জড়িয়ে পড়েন বিতর্কে। তবে শেষ পর্যন্ত আম্পায়ারদের হস্তক্ষেপে মিটে যায় সে ঝামেলা।
রোববার ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের দেখা আবারও। বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে। এর আগে বিশ্বকাপের ছয় দেখায় প্রতিবারই ভারতের কাছে হেরেছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সব ম্যাচ অনলাইনে কোনো ধরনের সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com-এ। এছাড়া র্যাবিটহোলের অ্যাপেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে।
আরও পড়ুন: ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান জেতেনি কখনোই
সারাবাংলা/এসএস