‘খলনায়ক’ গাপটিলের ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন উইলিয়ামসন
১৫ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩৯
লর্ডসে পেন্ডুলামের মতো দুলছিল বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচের ভাগ্য। কখনো ইংল্যান্ডের দিকে তো কখনো নিউজিল্যান্ডের দিকে। একটি ক্রিকেট ম্যাচে রোমাঞ্চের কত রং হতে পারে, কতটা রুদ্ধশ্বাস হতে পারে, কতটা নাটকীর হতে পারে তা দেখিয়ে দিল ইংলিশ ও কিউদের এই দ্বৈরথ। যেখানে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতে নিয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
কিন্তু সেটা নাও হতে পারত। ঐতিহ্যবাহী লর্ডসে রূপকথা লিখতে পারতো নিউজিল্যান্ড। হয়তো মার্টিন গাপটিলই দলের বর্ণিল স্বপ্ন ফিকে করে দিলেন!
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ইনিংসের ৫০তম ওভারের কথা। ট্রেন্ট বোল্টের চতুর্থ ডেলিভারিটি মিড উইকেটে পাঠিয়ে দ্বিতীয় রানের জন্য ছুটছিলেন স্টোকস। সীমানা থেকে মার্টিন গাপটিলের থ্রো সরাসরি যাচ্ছিল স্টাম্পের দিকে। নিজেকে বাঁচাকে ডাইভ দেন স্টোকস। বল তার ব্যাটে লেগে ফাঁকা জায়গা দিয়ে চলে যায় বাউন্ডারিতে। দৌড়ে ২ রানের সঙ্গে ওই অতিরিক্ত চারে আসে মোট আরও ৬ রান। মূলত এখানেই ধরাবাধা জয়টি নিউজিল্যান্ডের মুঠো গলে বেরিয়ে যায়।
জয়ের জন্য বাকি ২ বলে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৩ রান। সুপার হিরো স্টোকস ও টেলএন্ডার আদিল রশিদ সেটা সংগ্রহ করলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। যেখানে আগে ব্যাটিং করে স্কোর বোর্ডে ১৫ রান তোলেন বেন স্টোকস ও জস বাটলার। নেইল বাইটিং সুপার ওভারের নিষ্পত্তি হতে লাগে শেষ বল। বিজয় তিলক কপালে এঁকে ৪৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটায় ইংল্যান্ড। আর কিউই শিবিরে বাড়ে আরো চার বছরের অপেক্ষা। বিশ্বকাপ শিরোপা সেই অধরাই থেকে গেল!
ম্যাচ শেষে কিউদের হারের খলনায়ক হয়ে থাকলেন গাপটিল। কিন্তু দলপতি কেন উইলিয়ামসন বিষয়টি সামলে নিলেন অভিভাবকের মতোই। গুরু দণ্ডেও সতীর্থকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন না! স্রেফ বললেন, ওটা অপ্রতিরোধ্য ছিল।
উইলিয়ামসন ম্যাচ শেষে জানালেন, ‘আমার ধারণা ওই বলটা অপ্রতিরোধ্য ছিল। আমি বলতে চাইছি তুমি ওটাকে আটকাতে পারতে না। হারের পেছনে অন্য ফ্যাক্টরও ছিল। মাঠ, কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ সবকিছুই। এটা হতেই পারে। ক্রিকেটে খেলাটাই এমন। নিজেদের দিনে যে কোনো অসম্ভবও সম্ভব হয়ে উঠে। এটা নিয়ে আমাদের অতটা হতাশা নেই। অন্যান্য ম্যাচেও আমরা এটা দেখেছি।‘
কিন্তু যদি রানটা আরো ১০ বা ২০ বেশি হতো? তাহলে কী আপনাদের ভাগ্য বদলাতো? এই প্রশ্নে অবশ্য ইতিবাচক উত্তর মিলল, ‘হ্যাঁ, আমরা চেয়েছিলাম ২৫০-২৬০ রান করতে। তবে জানতাম কাজটি সহজ নয়। বোলাররা সঠিক এরিয়ায় বল করেছে।’
নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে যেখানে ম্যাচের ফল আসেনি। সুপার ওভারেও যেখানে ব্যবধান গড়েনি, ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়েছে বাউন্ডারির হিসেব কষে। ক্রিকেটীয় নিয়মে হয়তো নিউজিল্যান্ড হেরে গেছে। আসলেই কী তারা হেরেছে?
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি