Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিথ্যা অভিযোগে ফাইনালবঞ্চিত, তালাবদ্ধ রাখা হয় মেয়েদের


২৪ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৪

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৯ এ ঠাকুরগাঁও ফাইনালে গিয়েও অনিয়মের অভিযোগে শেষ পর্যন্ত আর খেলা হয়নি স্বপ্নের ফাইনাল। বুধবার (২৪ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে ঠাকুরগাঁও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

ঠাকুরগাঁও ফুটবল দলকে ফাইনালে খেলতে না দেওয়ার অভিযোগে এবং খেলোয়াড়দের নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে ঠাকুরগাঁও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।

বিজ্ঞাপন

ঠাকুরগাঁও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ময়মনসিংহকে টাইব্রেকারে হারানোর পর ফাইনালে উঠে ঠাকুরগাঁও। কিন্তু শেষ সময়ে অনিয়মের অভিযোগ এনে দলটিকে ফাইনাল থেকে বাদ দেওয়া হয়। ফেডারেশন অভিযোগ আনে চারজন খেলোয়াড়কে দুইবার করে খেলানোয় ফাইনাল থেকে বাদ দেওয়া হয় ঠাকুরগাঁওকে। এতে করে ফাইনালে রংপুরের বিপক্ষে ঠাকুরগাঁয়ের ফাইনাল খেলার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত রংপুরের সাথে ময়মনসিংহের ফাইনাল হয়। যেখানে ময়মনসিংহকে হারিয়ে চাম্পিয়ন হয় রংপুর।

অনিয়মের খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবী করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যেই চারজনের নামে অভিযোগ তাদের দুইজন আগে দুইবার খেলেছে এবং বাকি দুইজন সম্পূর্ণ নতুন। মিথ্যা অভিযোগ এনে ফাইনাল থেকে তাদের পরিকল্পিতভাবে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ঠাকুরগাঁও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বাবু। এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা অনেকগুলো দলের সাথে খেলে ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েও ফাইনাল খেলতে পারিনি। যেটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের মেয়েরা অনেক আশা নিয়ে এসেছিল। ফাইনালকে ঘিরে তাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। আমাদের মেয়েরা অনেক আশাবাদী ছিল টুর্নামেন্টের ফাইনালকে ঘিরে। কিন্তু অবাস্তব কিছু ভুল ধরে আমাদের ফাইনাল খেলা থেকে বঞ্চিত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ঠাকুরগাঁও দলের অধিনায়ক মোছা. মমতাজ বেগম ফাইনালের দিন তার অভিজ্ঞতার কথা জানান। এ সময় তিনি বলেন, আমরা সেমিফাইনাল জিতেছি। স্বভাবতই আমরা ফাইনাল খেলতে স্টেডিয়ামে যাই। কিন্তু ঢোকার সময় আমাদের গেটে বাঁধা দেওয়া হয়। প্রথমে আমাদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফাইনালে রংপুর বনাম ঠাকুরগাঁও লেখা থাকার কথা থাকলেও সেখানে লেখা ছিল রংপুর বনাম ময়মনসিংহ। অথচ সেমিফাইনালে এই ময়মনসিংহকে টাইব্রেকার হারিয়েই আমরা ফাইনালে উঠেছি। আমরা স্টেডিয়ামে ঢুকতে গেলে পুলিশ আমাদের পথ রোধ করে। পরে আমাদের সবাইকে একটি রুমে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। খেলা শেষ হলে আমাদের গেট খুলে দেওয়া হয় এবং আমাদেরকে চলে যেতে বলা হয়।

টিম ম্যানেজার মো. তাজুল ইসলাম জানান, ফাইনাল খেলার কিছু আগে হঠাত খবর আসে আমরা ফাইনাল খেলতে পারবো না। এর পিছনের কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায় আমাদের দলে চারজন খেলোয়াড় আছে যারা ইতোমধ্যে দুইবার জেএফএ অনূর্ধ্ব ১৪ খেলায় অংশগ্রহণ করেছে।

কিন্তু এই তথ্য ভুল বলে দাবী করে ঠাকুরগাঁও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবী যে দুইজন খেলোয়াড়ের কথা বলা হয়েছে, তারা দুইবার করে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে। বাকি দুইজনের নামে যে অভিযোগ তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, কারণ তারা এবারই প্রথম টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু এই অযুহাতে ফাইনাল খেলা থেকে তাদের বাদ দেওয়ার কোন কারণ দেখছে না জেলা ফুটবল ফেডারেশন। তারা জানায়, যদি খেলোয়াড়ের সমস্যা থাকে তাহলে তারা সেই খেলোয়াড়কে অবৈধ বলতে পারে। কিন্তু এইভাবে কোনরকম ঘোষণা ছাড়াই পুরো দলকে ফাইনাল থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার পিছনের যুক্তি কারোও বোধগম্য না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আমরা ফাইনালে গিয়েছি। আমাদের দলের মেয়েদের জোর করে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। অমানবিক কাজ করে আমাদের ফাইনাল খেলতে দেওয়া হয়নি। অত্যন্ত গরিব পরিবারের মেয়েরা এই টুর্নামেন্ট খেলে স্বপ্ন দেখছিল ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলার। আমাদের ভুল ছিল আমাদের দলে পরপর দুবার দুইজন খেলোয়াড় খেলেছে। অথচ (প্রমাণ ও নানান সূত্রের বরাত দিয়ে) রংপুর, ময়মনসিংহ দলের অনেক খেলোয়াড় আছে যারা ৪ বার পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে খেলেছে। আমাদের এই অভিযোগ যখন আমরা ফুটবল ফেডারেশনের কাছে দিয়েছি, তখন তারা আমাদের অভিযোগ আমলে নেয়নি। ১৯ জুলাই আমরা দেখেছি ফেডারেশনের স্বেচ্ছাচারিতা। নারী পুলিশ দিয়ে আমাদের খেলোয়াড়দের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। ফাইনালে উঠা খেলোয়াড়দের উপর পুলিশ দিয়ে যেভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা অবশ্যই নিন্দনীয়। টুর্নামেন্টটি নতুন করে আয়োজন করার জোর দাবী জানাই আমরা।

ঠাকুরগাঁও বাফুফে মহিলা ফুটবল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর