জয় নিয়ে শীর্ষেই রইল রিয়াল-লিভারপুল
৫ অক্টোবর ২০১৯ ২১:৫৯
লা লিগায় এ মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুটি দল হলো রিয়াল মাদ্রিদ এবং গ্রানাডা। দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল, রিয়াল ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আতিথ্য জানিয়েছিল গ্রানাডাকে। ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকা রিয়াল পয়েন্ট খোয়ানোর ভয়ে থাকলেও শেষ অবধি ৪-২ গোলে জিতেছে। তাতে লিগের টেবিলে শীর্ষেই থাকলো জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা।
ঘরের মাঠে ৪-৩-৩ ফরমেশনে রিয়ালের কোচ জিনেদিন জিদান একাদশ সাজান। শুরুর একাদশে রিয়ালের হয়ে মাঠে নামেন আলফোনসে আরেওলা, আলভারো অদ্রিওজোলা, রাফায়েল ভারানে, সার্জিও রামোস, দানি কারভাহাল, ফেদেরিকো ভালভারদে, ক্যাসেমিরো, টনি ক্রুস, গ্যারেথ বেল, করিম বেনজেমা আর এডেন হ্যাজার্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবশেষ ম্যাচে ক্লাব ব্রুগার বিপক্ষে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল রিয়াল। এই ম্যাচে জয় নিয়ে লিগের পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের শীর্ষস্থানটাও পাকা করার সুযোগ খুঁজেছে জিদানের শিষ্যরা। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই লিড নেয় স্বাগতিক রিয়াল মাদ্রিদ। ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেলের অ্যাসিস্ট থেকে দলের হয়ে গোলটি করেন ফরাসি তারকা করিম বেনজেমা। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। ১৬ মিনিটের মাথায় ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। বেনজেমার তুলে দেওয়া বলে হেড করেছিলেন একেবারে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা ভালভারদে। কিন্তু তার হেড থেকে বল সরাসরি গ্রানাডার গোলরক্ষক রুই সিলভার গ্লাভসে জমা পড়ে।
২৬ মিনিটের মাথায় কাউন্টার অ্যাটাকে আবারও গ্রানাডার ডি-বক্সে বল নিয়ে প্রবেশ করে রিয়াল। বেনজেমার ডিফেন্স চেঁড়া পাসকে কাজে লাগাতে পারেনি দানি কারভাহাল। রিয়ালের সহজ গোলের সুযোগটি পা গলিয়ে রুখে দেন রুই সিলভা। ৩৪ মিনিটের মাথায় চোট থাকায় মাঠ থেকে উঠে যান রিয়ালের জার্মান তারকা টনি ক্রুস। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন রিয়ালের নাম্বার টেন ক্রোয়েশিয়ান তারকা লুকা মদ্রিচ।
প্রথমার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন রিয়ালের বেলজিয়ান তারকা এডেন হ্যাজার্ড। ভালভারদের বাড়ানো বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকেন বেলজিয়ান তারকা। গ্রানাডার দুই ডিফেন্ডারের মাঝে দাঁড়িয়ে গোলরক্ষক রুই সিলভার মাথার উপর দিয়ে জালে বল জড়ান হ্যাজার্ড। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় জিদান শিষ্যরা।
বিরতির পর ম্যাচের ৬১ মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-০ গোলের লিড নেয়। হ্যাজার্ডের অ্যাসিস্ট থেকে গ্রানাডার ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডানপায়ের জোরালো শট নেন মদ্রিচ। বাঁকানো শটে বল জালে জড়ালে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। রিয়ালের গোলরক্ষক আরেওলা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে গ্রানাডার এক খেলোয়াড়ের পায়ে মেরে বসেন। তাতে হলুদ কার্ডও দেখতে হয় তাকে। ৬৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান গ্রানাডার ডারউইন ম্যাচিস। ভেনেজুয়েলার এই ফরোয়ার্ডের গোলে ম্যাচে ফেরে গ্রানাডা। ৭১ মিনিটে হ্যাজার্ডের বদলি হিসেবে আসেন ইসকো। ৭৮ মিনিটে ব্যবধান আরও কমায় টেবিলের দুইয়ে থাকা দলটি। এবার উড়ে আসা বলে হেড করেন ভিক্টর ডিয়াজ, বল গিয়ে পড়ে আনমার্ক থাকা পর্তুগিজ ডিফেন্ডার ডোমিনগোস দুয়ার্তের পায়ে। তিনি রিয়ালের জালে বল জড়াতে ভুল করেননি। ম্যাচের স্কোর দাঁড়ায় ৩-২।
৮৩ মিনিটের মাথায় বেলকে তুলে নিয়ে জিদান মাঠে নামান কলম্বিয়ান তারকা জেমস রদ্রিগেজকে। এই কলম্বিয়ান ম্যাচের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে গোল করেন। বাকি সময়ে আর কোনো দল গোল দিতে না পারলে ৪-২ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। এই জয়ে ৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল। সমান ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে গ্রানাডা, তিনে এক ম্যাচ কম খেলা অ্যাতলেতিকো, ১৩ পয়েন্ট নিয়ে চারে বার্সা।
ওদিকে, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল লিভারপুল আর লিচেস্টার সিটি। এই ম্যাচের আগে চলতি মৌসুমে সাত ম্যাচের সাতটিতে জিতে পূর্ণ ২১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ছিল লিভারপুল। ২-১ গোলের জয়ে জার্গেন ক্লপের শিষ্যরা শীর্ষেই থাকলো। ম্যাচের ৪০ মিনিটে দলকে লিড পাইয়ে দিয়েছিলেন সেনেগালের লিভারপুল তারকা সাদিও মানে। ৮০ মিনিটের মাথায় ম্যাডিসনের গোলে সমতায় ফেরে লিচেস্টার সিটি। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করেন জেমস মিলনার। লিভারপুল নিজেদের মাঠ অ্যানফিল্ডে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
৮ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুল আছে শীর্ষে। দুইয়ে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি ৭ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট পেয়েছে। তিনে থাকা লিচেস্টার সিটির ৮ ম্যাচে অর্জন ১৪ পয়েন্ট। আর্সেনাল ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে আর পাঁচে থাকা ওয়েস্ট ম্যাচের পয়েন্ট ১২।