ক্ষমা চেয়ে কর্মীদের বেতন বহাল রাখল লিভারপুল
৭ এপ্রিল ২০২০ ২০:০০
করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় সব ধরনের খেলাধুলা স্থগিত। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ হয়েছে অনেক আগে। ঠিক কবে নাগাদ শুরু হবে সেই নিশ্চয়তাও নেই। এমন পরিস্থিতি মোটা অঙ্কের ক্ষতি ফুটবলারদের বেতন কর্তনসহ বিভিন্ন উপায়ে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছে ক্লাবগুলো। তবে ক্লাবের কর্মীদের ব্যাপারে এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনায় পড়ে লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত সমালোচনার পর ক্ষমা চেয়েছে লিভারপুল আর জানিয়েছে নিজেরাই ক্লাবের কর্মীদের বেতন দিয়ে যাবে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবিলায় বৃটিশ সরকারের পক্ষ থেকে সকল নাগরিককে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে যারা চাকরি করতে পারছেন না তাদের সরকারের পক্ষ থেকে বেতনের ৮০ শতাংশ প্রদান করা হবে। আর এই সুযোগটাই নিতে চেয়েছিল লিভারপুল।
নন-প্লেয়িং স্টাফদের বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছিল অল রেডরা। যেন সরকারের ‘জব রিটেনশন স্কিমে’র আওতায় বেতনের ৮০ শতাংশ পায় তারা। কর্মীদের বাকি ২০ শতাংশ প্রদান করতে চেয়েছিল লিভারপুল। বিবৃতি দিয়ে ক্লাবটির পক্ষ জানানো হয়েছিল, ‘এই পরিস্থিতিতে সবার চাকরি যাতে নিরাপদে থাকে, আর কর্মীদের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেটাই বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভেবেছে ক্লাবের সিনিয়র কর্মকর্তারা।’ আর এমন ঘোষণার পর থেকেই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড়দেরও রোষানলে পড়ে ইংলিশ জায়ান্টরা। আর শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় অল রেডরা।
ক্লাবের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হয়ে সাবেক ডিফেন্ডার জেমি ক্যারাঘার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘এমন মহামারির শুরুর দিকে ক্লাবের কোচ ইয়্যুর্গেন ক্লপ সবার জন্য সমবেদনা দেখিয়েছেন, ক্লাবের সিনিয়র খেলোয়াড়েরা প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়দের বেতন কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় ভালোভাবে জড়িত। সেই সম্মান, সুনাম সব ধূলিসাৎ করে দিয়েছে ক্লাব! এটি খুবই জঘন্য সিদ্ধান্ত ক্লাবের পক্ষ থেকে!’
অবশেষে সমালোচনার মুখে পড়ে সোমবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক বিবৃতি দিয়েছেন লিভারপুলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার মুর। সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা ভেবে দেখেছি, কর্মীদের বেতন দেওয়ার ব্যাপারে আমরা যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি, সেটা ভুল ছিল। তাই ব্রিটিশ সরকারের স্কিমের জন্য আমরা আবেদন করব না। যেভাবে কর্মীরা আমাদের কাছ থেকে বেতন পাচ্ছিলেন, সেভাবেই পেয়ে যাবেন। ক্লাবের কর্মীরা যেন ক্লাবের পক্ষ থেকে এই কঠিন সময়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পান, আমাদের লক্ষ্য সব সময় এটাই ছিল, এখনো তাই আছে।’
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে লিভারপুলের প্রকাশিত এক তথ্য মোতাবেক দেখা যায় ২০১৮-১৯ মৌসুমে তাদের কর প্রদান করার আগে তাদের আয় ৫১০ লাখ ডলার! ক্লাবের ফুটবলারদের প্রদান করা হচ্ছে লাখ লাখ ডলারে বেতন আর সেখানেই অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে লিভারপুল। সাধারণ কর্মীদের ছুটিতে পাঠানো বিধিবহির্ভূত না হলেও অমানবিকই।
করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস কর্মকর্তাদের ছাটাই কর্মকর্তাদের বেতন কাটা ক্ষমা চাওয়া লিভারপুল