সাকিব-তামিম-মুশফিকের মধ্যে ‘প্রতিযোগিতা’ও চলে
২৪ জুন ২০২০ ১৫:৪৭
বিকেএসপিতে মুশফিকুর রহিম ছিলেন সাকিব আল হাসানের এক ব্যাচ ‘সিনিয়র’। তবে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে দুজনের যাত্রা শুরু প্রায় একই সময়ে। অনূর্ধ্ব-১৫ দল থেকে কাছাকাছি সময়ে ডাক পেয়েছিলেন। তামিম ইকবাল অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে তাদের সঙ্গী হন। সেই থেকে তিনজনের এক সঙ্গে পথচলা শুরু, যা এখনো অব্যাহত। বয়সভিত্তিক পর্যায় পেরিয়ে তিনজন জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে।
লম্বা সময়ে তিনজনই দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন। সাকিব আল হাসান জানালেন, তিনজনের মধ্যে প্রতিযোগিতাও চলে। কেউ একজন রান করলে অন্য দুজন চান তাকে ছাড়িয়ে যেতে। স্বাস্থ্যকর এই প্রতিযোগিতা দলের জন্য ভালো বলছেন সাকিব। সম্প্রতি ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাকিব। তামিম, মুশফিকের সঙ্গে হেলদি প্রতিযোগিতার গল্প শুনিয়েছেন সেখানেই।
হার্শার এক প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, ‘তামিম, মুশফিক ও আমার মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা সবসময় কাজ করে। আর এটা দলের জন্যও খুব ভালো। আমি মনে করি, দলের ভালোর জন্য এমন সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা দরকার আছে। ধরেন, কেউ যদি শতক হাঁকালো তখন আপনাকে ১২০ রান করতে হবে। আর আমাদের মধ্যে এই প্রতিযোগিতাই চলে।’
তিন ফরম্যাট মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের হয়ে ৩৭৪ ম্যাচ খেলেছেন। সাকিব ৩৩৮টি, তামিম ৩৪৫টি। রানের হিসেবে তিনজনের রানই কাছাকাছি। তামিম তিন ফরম্যাটে ২৩ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ১৩ হাজার ৩৬৫। মুশফিকের রান ১১ হাজার ৮৬৯, সাকিবের ১১ হাজার ৭৫২। সাকিব-মুশফিকের সেঞ্চুরি ১৪টি করে। তামিম ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, টেস্টে শীর্ষে আছেন মুশফিকুর রহিম।
সাকিব বললেন তারা প্রতিজনই একজন অন্য জনকে টপকে যেতে চায়, ‘আমরা তিনজনই সব ফরম্যাটের রানের ক্ষেত্রে খুব কাছাকাছি আছি। এমনকি টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বলেন আমাদের মধ্যে খুব বেশি দূরত্ব নেই। পার্থক্য হয়ত সর্বোচ্চ এক হাজার রানের মতো হতে পারে। তবে আমাদের মধ্যে প্রত্যেকে অন্যজনকে টপকে শীর্ষে যেতে চাই। আমি মনে করি যে কোনো দলের জন্য এটা খুব ভালো।’
গত এক যুগে বাংলাদেশের বেশিরভাগ জয়েই এই তিনজনের বড় অবদান। তিনজন মিলে বাংলাদেশকে কত ম্যাচে হয় এনে দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। কখনো কখনো একক নৈপূন্যেও দেশকে জিতিয়েছেন। তবে এখনই এসব নিয়ে গর্ব করতে নারাজ সাকিব।
দেশ সেরা ক্রিকেটার বলছেন, অবসর নেওয়ার পর তিনজন মিলে ভাববেন যে দেশের জন্য কতটা করতে পারলেন, ‘আমার মনে হয় অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে খেলে আসছি আমরা। আশা করি আরও কয়েক বছর খেলে যাবো। আর আমি মনে করি, এরপরই এটা ভাবার সেরা সময়; যখন আমরা একসঙ্গে অবসরে যাবো তখন। আমরা তখন একসঙ্গে বসে ভাবনা ছাড়া আলোচনা করবো বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য আমরা কী করেছি।’
এখন শুধু আগামী বিশ্বকাপ নিয়েই ভাবার সময় বলছেন সাকিব, ‘এই মুহূর্তে আমরা ২০২৩ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছি। যেটা কিনা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আমাদের জন্য এখন কেবল সামনে দেখার পালা। আশা করি কয়েক বছর পরে আমরা পেছনে দেখবো।’