ইংলিশদের ইতালিয়ান জুজু কাটবে তো?
৯ জুলাই ২০২১ ২৩:৩৬
ডেনমার্ককে সেমিফাইনালে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইংল্যান্ড। আর এতেই ৫৫ বছরের মেজর টুর্নামেন্টের শিরোপা খরা কাটানোরও পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ইংলিশরা। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে আসা ইংলিশদের ৫৫ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর পথে মেজর টুর্নামেন্টে ইতালিকেও প্রথমবারের মতো হারাতে হবে।
মেজর টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড ও ইতালি একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে মোট চারবার। আর প্রতিবারই ইংলিশদের হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছে আজ্জুরিরা। তবে এবার কি সেই জুজুর ভয় কাটানোর পালা? নাকি সংখ্যাটা চার থেকে পাঁচ হবে?
১৯৮০ সালে প্রথমবার ইউরোতে দেখা হয়েছিল এই দুই দলের। সেবারও আজ্জুরিদের বিপক্ষে ফেভারিটের তকমা গায়ে নিয়েই মাঠে নেমেছিল ইংলিশরা। সে সময় লিভারপুল ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের নিয়ে বেশ শক্ত দলই গড়েছিল ইংলিশরা। তবে মার্কো তারদেল্লির ১১তম মিনিটে করা একমাত্র গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল ইতালি। আর পরের ম্যাচে স্পেনের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ইংলিশদের।
ঠিক ১০ বছর পর ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণি ম্যাচে আবারও দেখা দুই দলের। সেবার রবার্তো বাজ্জিওর গোলে লিড নেওয়া ইতালির বিপক্ষে ইংলিশদের সমতায় ফেরান ডেভিড প্ল্যাট। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে ইংলিশদের আর জয়ের মুখ দেখা হয়নি।
এরপর ২২ বছর পর ২০১২ সালে ইউরোর কোয়ার্টারে আবারও দেখা এই দুই জায়ান্টের। সেবার ১২০ মিনিটের খেলায় ইংলিশদের কোণঠাসা করে রেখেছিল আজ্জুরিরা। তবে নির্ধারিত সময়েও খেলার ফলাফল না আসায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর শেষ পর্যন্ত জো হার্টের মাথার ওপর দিয়ে আন্দ্রেয়া পিরলোর চিপ শটে গোলে ইতালি টাইব্রেকারে জিতে পৌঁছে যায় সেমিতে।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ৪র্থ বারের মতো আবারও দেখা দুই দলের। ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে একই গ্রুপে ছিল ইতালি ও ইংল্যান্ড। সেবার ড্যানিয়েল স্টারিজের গোলে সমতায় ফেরার আগে ক্লদিও মারচিসোর গোলে পিছিয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। আর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হেডে দারুণ এক গোল করে আবারও ইতালিকে লিড এনে দেন মারিও বালোতেল্লি। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আজ্জুরিরা।
ওয়েম্বলিতে আরও এক জুজু তাড়া করছে ইংলিশদের পেছনে। শেষ দুবার ইউরোর ফাইনালে স্বাগতিক দলগুলো যারা ফাইনাল খেলেছে তাদের দুই দলই হেরেছে। ২০০৪ সালে পর্তুগালের লিসবনের ইউরোর ফাইনালে গ্রীসের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল স্বাগতিক পর্তুগাল। আর ২০১৬ সালের ইউরোর ফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম ইউরোপিয়ান শিরোপা জয় করে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল।
অবশ্য ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলা দলগুলোর জন্য প্রেরণা যোগাতে পারে ইতালি, ফ্রান্স এবং স্পেন। ১৯৬৪ সালে ঘরের মাঠে স্পেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করে।
এরপরের ইউরোতে ১৯৬৮ সালে ঘরের মাঠে যুগস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময় শেষেও ১-১ গোলে ইতালি ড্র করলে ম্যাচ গড়ায় রিপ্লে ম্যাচে(সে সময় অতিরিক্ত সময় শেষেও ম্যাচ সমতায় শেষ হলে নতুন করে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হত)। রিপ্লে ম্যাচে যুগোস্লোভাকিয়াকে ২-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথম ইউরো জয় করে ইতালি।
১৯৮৪ সালে ফ্রান্সের পার্ক দে প্রিন্সে স্পেনকে ২-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে নিজেদের প্রথম ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ঘরে তোলে ফ্রান্স।
তবে এবার ইংল্যান্ড হাটবে কোন পথে? ঘরের মাঠে শিরোপাজয়ীদের কাতারে গিয়ে ব্যবধান ৪-২ করবে নাকি ঘরের মাঠে শিরোপা হারানোদের দলে যোগ দিয়ে ৩-৩ সমতায় শেষটা টানবে? এই উত্তরের অপেক্ষার অবসান ঘটবে আগামী ১২ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের ফাইনালের পর।
সারাবাংলা/এসএস
ইউরো ২০২০ ইউরোর ফাইনাল ইংল্যান্ড বনাম ইতালি উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম মেজর টুর্নামেন্ট