অলিম্পিক থেকে নিষিদ্ধ নুরিন দেশে ফিরে পাচ্ছেন বীরের মর্যাদা!
৩১ জুলাই ২০২১ ১৫:৩৭
ফেথি নুরিন, আলজেরিয়ার এই জুডোকার নামটা এখন বেশ আলোচিত। দেশে ফিরে পাচ্ছেন সংবর্ধনার পর সংবর্ধনা। প্রশংসা করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রশংসা পাচ্ছেন অন্য দেশ থেকেও। অথচ পদক জয় নয়, অলিম্পিক থেকে বহিস্কৃত হয়ে দেশে ফিরেছেন এই জুডোকা! ফেথি নুরিনের গল্পটা একটু অন্য রকম।
অলিম্পিকে নিজ ইভেন্টে ইসরায়েলি প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে চাননি নুরিন। ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের নির্মম অত্যাচারের প্রতিবাদ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেন আলজেরিয়ার এই জুডোকা। জুডোতে ছেলেদের ৭৩ কেজি ওজন শ্রেণীতে প্রথম রাউন্ড জিতলে দ্বিতীয় রাউন্ডে তাকে লড়তে হতো ইসরায়েলের জুডোকা তোহার বাটবালের বিপক্ষে। এতে প্রথম রাউন্ডেই খেলেননি তিনি। ম্যাচের চার দিন আগেই জানিয়ে দেন নিজের সীদ্ধান্ত। কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ‘ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো এসব কিছুর (অলিম্পিকে খেলা) চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এ সিদ্ধান্তে কোনো নড়চড় হবে না।’
স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি অলিম্পিক কর্তৃপক্ষ। নুরিনকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন (আইজেএফ) নুরিন ও তার কোচকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জুডো থেকে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু এমন সীদ্ধান্তের কারণে নিজ দেশ ও মুসলিম বিশ্বের কাছে প্রশংসা পাচ্ছেন নুরিন।
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলি প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা না করার সীদ্ধান্তকে ‘পুরো দেশের জন্য সম্মান’ মনে করছেন নুরিন। দেশে ফিরে বলেছেন, ‘আমার কোচ আর আমি মিলে (না খেলার) সিদ্ধান্তটা নিয়েছি এবং এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গর্ব হয় আমার। এই সিদ্ধান্ত সবার আগে আমাকে সম্মানিত করছে, আমার পরিবারকে সম্মানিত করছে, আলজেরিয়ার মানুষ আর আলজেরিয়া পুরো দেশটাকে সম্মান এনে দিচ্ছে। কারণ, প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ তেববুন বিশ্বের কাছে আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে আমরা এই ব্যাপারগুলোকে স্বাভাবিকীকরণের সঙ্গে একমত নই, আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষেই আছি।’
নুরিনের জন্য অন্যান্য মুসলিমপ্রধান দেশ থেকেও প্রশংসাবাণী আসছে। তিনি বলেন, ‘আরব ও মুসলিম বিশ্ব থেকে প্রশংসা জানানো অনেক ফোন কলও পেয়েছি এ কারণে।’
নুরিনের এমন সীদ্ধান্ত এই প্রথম নয়। ২০১৯ সালের বিশ্ব জুডো চ্যাম্পিয়নশিপেও ইসরায়েলি প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।