টাইব্রেকারে সুইসদের স্বপ্ন ভেঙে সেমিতে ইংল্যান্ড

গোটা টুর্নামেন্টেই সাদামাটা পারফরম্যান্স ইংল্যান্ডের। কোয়ার্টার ফাইনালেও সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে গোল হজম। এরপর সমতায় ফিরলেও নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আসেনি ফলাফল। অতিরিক্ত সময়েও কোনো দল পায়নি গোলের দেখা। এতেই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের জন্য খেলা গড়ায় টাইব্রেকার। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে সুইসদের হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে ইংলিশরা।

টাইব্রেকারে একটি শট ঠেকিয়ে ব্যবধান গড়ে দিলেন জর্ডান পিকফোর্ড। সুইসদের আশা গুঁড়িয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে উঠল গ্যারেথ সাউথগেটের দল।

ডুসেলডর্ফে শনিবার তৃতীয় কোয়ার্টার-ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে জেতে গত আসরের রানার্সআপরা। এর আগে মূল ম্যাচে ব্রিল এমবোলো সুইজারল্যান্ডকে এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা টানেন বুকায়ো সাকা।

টাইব্রেকারে মানুয়েল আকনজির দুর্বল শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডের পাঁচ শটের সবগুলোই যায় জালে। টানা দুটি ইউরোসহ এই নিয়ে পাঁচবার বড় টুর্নামেন্টের (বিশ্বকাপ, ইউরো) কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিল সুইসরা।

ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই দল কয়েকবার প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ালেও উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেখাতে পারেনি কেউ। কোনো গোলরক্ষককেও দিতে হয়নি পরীক্ষা, লক্ষ্যে যে শটই নিতে পারেনি কেউ! এই অর্ধের শেষ দিকে বক্সে কোবি মাইনোর শট প্রতিহত করে দলকে বিপদমুক্ত করেন সুইস অধিনায়ক গ্রানিত জাকা। প্রথমার্ধে গোলের জন্য ইংল্যান্ড শট নিতে পারে ৫টি, সুইজারল্যান্ড ২টি।

বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা ভালো করে সুইজারল্যান্ড। ৫১তম মিনিটে বক্সে ঢুকে কাছ থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট করেন এমবোলো। লক্ষ্যে কোনো দলের প্রথম শট এটি।

দারুণ এক আক্রমণ থেকে ৭৫তম মিনিটে ‘ডেডলক ভাঙে’ সুইসরা। ডান দিক থেকে ফাবিয়ান শারের পাসে বলে পা ছোঁয়ালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি ইংলিশ ডিফেন্ডার জন স্টোনস, দুরের পোস্টে স্লাইডে জালে পাঠান সুইস তারক ফরোয়ার্ড এমবোলো। গোল হজমের পর একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনেন ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবে শততম ম্যাচের মাইলফলক ছোঁয়া সাউথগেট।

৮০তম মিনিটে চমৎকার গোলে দলকে সমতায় ফেরান সাকা। ডেকলান রাইসের পাস ধরে একটু আড়াআড়ি এগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে আর্সেনাল ফরোয়ার্ডের বাঁ পায়ের শট দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়।

এরপর ৯৫তম মিনিটে দুর্দান্ত সেভে সুইজারল্যান্ডকে বাঁচান ইয়ান সমের। ২৫ গজ দূর থেকে রাইসের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি। ১০২তম মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে জুড বেলিংহামের শট অনায়াসে ঠেকান ইন্টার মিলানের এই গোলরক্ষক। ১০৮তম মিনিটে দলের রেকর্ড স্কোরার হ্যারি কেইনকে তুলে ইভান টনিকে নামান সাউথগেট।

১১৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর ফাঁকায় বল পেয়ে কোনাকুনি শটে উড়িয়ে মারেন সুইস ডিফেন্ডার শার। ১১৮তম মিনিটে জেরদান সাচিরির কর্নার লাগে ক্রসবারে। পরের মিনিটে আমদোনির শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন পিকফোর্ড।

এতেই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে যেখানে ইংলিশদের জয়ের নায়ক পিকফোর্ড।

নকআউট পর্বের প্রথম দুই ধাপেই হারের মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়াল ইংল্যান্ড। শেষ ষোলোয় স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ে যোগ করা সময়ের শেষ দিকে বেলিংহামের গোলে ম্যাচে ফেরে তারা, অতিরিক্ত সময়ে কেইনের গোলে জেতে ২-১ ব্যবধানে।

টানা দ্বিতীয় ফাইনাল থেকে আর এক জয় দূরে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সেমি-ফাইনালে নেদারল্যান্ডস অথবা তুরস্কের বিপক্ষে খেলবে তারা।

 

সারাবাংলা/এসএস

ইউরো ২০২৪ ইংল্যান্ড বনাম সুইজারল্যান্ড কোয়ার্টার ফাইনাল টপ নিউজ