বিদায় বেলায় ট্রফিহীন মাহমুদউল্লাহ— আমাদের অর্জনগুলো কিন্তু কম নয়
৮ অক্টোবর ২০২৪ ২২:০৩
বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। আজ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবসরের ঘোষণার মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাঁচ বড় তারকার যাত্রা থেমে গেল। মাশরাফি বিন মুর্তজা অনেক দিন যাবত ক্রিকেটের বাইরে। তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন আগেই। কদিন আগে টি-টোয়েন্টি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। আজ বিদায় বলে দিলেন মাহমুদউল্লাহ।
দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশ ক্রিকেটকে টানা এই পাঁচজনকে আহ্লাদ করে ‘পঞ্চপাণ্ডব’ ডাকা হয়। কিন্তু পঞ্চপাণ্ডবের যুগে কোনো ট্রফি জিততে পারেনি বাংলাদেশ। একটা আক্ষেপ হয়ত থেকেই যাচ্ছে। বিদায় বেলায় তা নিয়ে আক্ষেপ মাহমুদউল্লাহরও নিশ্চয় হচ্ছে। তবে অর্জনগুলোকেও খাটো করে দেখতে নারাজ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। বলেছেন, এক বিন্দুও আক্ষেপ নেই তার।
আজ অবসর ঘোষণার সময় ট্রফিহীন ‘পঞ্চপাণ্ডবে’র বিদায় প্রসঙ্গে প্রশ্নে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘ট্রফি নেই, এটা অবশ্যই খারাপ লাগার মতো। তবে আমি এ কথাটা মানতে রাজি নই যে আমাদের কোনো অর্জন নেই। যদি ট্রফি জেতাই মানদণ্ড হয়, তাহলে অনেককেই আমরা লিজেন্ড বলতাম না। ২০০৭ সালে যখন আমি এই ড্রেসিংরুমে এসেছিলাম, সেই তুলনায় এখন অনেক পার্থক্য। শুধু পাঁচ পাণ্ডব নয়, এটা সবার অর্জন। আমি তারতম্য করতে পছন্দ করি না।’
‘ভালোর তো শেষ নেই। খেলা জিনিসটাই এমন। যত ভালো করেন, আরও ভালো সুযোগ থাকেই। সেদিক থেকে চিন্তা করলে আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। তবু আমরা যে পরিমাণ ম্যাচ খেলি, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক, পাশাপাশি যে উইকেটে খেলেছি বাংলাদেশ, সেদিক থেকে খারাপ বলব না।’- বলেছেন মাহমুদউল্লাহ।
২০০৭ সালে বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি যাত্রা শুরু হয় মাহমুদউল্লাহর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ভালো সময় যেমন দেখেছেন, খারাপ সময়ও কম আসেনি। তবে আক্ষেপ নেই মাহমুদউল্লাহর। বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলার একটি মুহূর্তও আক্ষেপ করি না। আলহামদুলিল্লাহ, কোনো আক্ষেপ নেই। এক ফোটাও আক্ষেপ নেই। বাংলাদেশের হয়ে এত বছর খেলেছি, ব্যক্তিগতভাবে যা আমার জন্য খুবই ভালো ছিল। আমি ২০০৭ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি যতটুকু খেলেছি, জানি না কতটা পেরেছি, তবে আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি।’
মাহমুদউল্লাহ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩৯টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে স্মরণীয় ইনিংস অনেক। ২০১৮ সালে নিদাহাশ ট্রফিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে তার ১৮ রানে অপরাজিত ৪৩ রানের ইনিংসটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। আবার ভারতের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুতে যখন ৩ বলে জয়ের জন্য ২ রান লাগত তখন বড় শট খেলে আউট হয়ে লজ্জায়ও পরেছেন।
বিদায় বেলায় স্মরণীয় ও হতাশার ইনিংস খুঁজতে গিয়ে ওই দুই ইনিংসের কথাই বললেন রিয়াদ, ‘২০১৬ ব্যাঙ্গালুরু…হতাশাজনক এবং জীবন বদলে ফেরার মতো মুহূর্ত। কারণ আমার জন্য সেটা ছিল অনেক বড় শিক্ষা। আর সেরা মুহূর্ত নিদাহাস ট্রফি।’
উল্লেখ্য, আগামীকাল ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টি খেলতে নামবে বাংলাদেশ। আজ মাহমুদউল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে এই সিরিজটিই তার শেষ সিরিজ।
সারাবাংলা/এসএইচএস