বলিউডের সোনালি যুগের এক অনন্য নাম ধর্মেন্দ্র। হয়তো আর কখনও ক্যামেরার সামনে তাকে দেখা যাবে না, কিন্তু পর্দায় তার শেষ উপস্থিতি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। মৃত্যু তার যাত্রা থামিয়ে দিলেও, অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র ‘ইক্কিস’– এর মধ্য দিয়ে তিনি যেন জীবনের আরেক অধ্যায়ে রয়ে গেছেন অনন্তকাল।
‘ইক্কিস’ শুধু একটি যুদ্ধনির্ভর চলচ্চিত্র নয়— এটি সাহস, ত্যাগ আর এক পিতা-পুত্রের সম্পর্কের গভীর গল্প। ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়কার বসন্তর যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তৈরি এই সিনেমা ভারতের সর্বকনিষ্ঠ পরমবীর চক্রপ্রাপ্ত শহিদ অরুণ ক্ষেত্রপালের জীবনকে নিবিড়ভাবে তুলে ধরে।
অরুণের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ধর্মেন্দ্র। যুদ্ধের আগুনে ঝলসে যাওয়া সময়ের মধ্যে এক বাবার বুকভরা গর্ব, আবার একই সঙ্গে ভয় আর আশঙ্কার মিশ্র অনুভূতি— ধর্মেন্দ্র সেই আবেগকে পর্দায় ধরেছেন সাবলীলভাবে।
অন্যদিকে ২১ বছর বয়সে জাতির জন্য প্রাণ বিসর্জন দেওয়া অরুণ ক্ষেত্রপালের ভূমিকায় দেখা যাবে অমিতাভ বচ্চনের নাতি অগস্ত্য নন্দাকে। দু’জনের প্রজন্মভেদী উপস্থিতি যেন ‘ইক্কিস’-কে আরও বেশি প্রতীকী করে তুলেছে।
ছবির পোস্টার ও ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই দর্শকের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। পিতা-পুত্রের মমতা, যুদ্ধের ভয়াবহতা, দেশের প্রতি আত্মত্যাগ— সব মিলিয়ে ‘ইক্কিস’ যেন দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে মুক্তির আগেই। অনেকেই বলছেন, এই ছবিটি ধর্মেন্দ্রর প্রতি এক আবেগঘন বিদায়ী প্রণাম।
ছবির ট্যাগলাইন—‘বাবারা ছেলেদের লালন-পালন করেন, মহান মানুষরা দেশকে লালন-পালন করেন।’ এই বাক্যই যেন চলচ্চিত্রের আবহ পুরোটা ব্যাখ্যা করে দেয়।
পরিচালক শ্রীরাম রাঘবন জানিয়েছেন, আগামী ২৫ ডিসেম্বর, বড়দিনে ভারতজুড়ে মুক্তি পাচ্ছে ‘ইক্কিস’। একইসঙ্গে এটি ধর্মেন্দ্রকে শেষবার বড় পর্দায় দেখার সুযোগও হয়ে উঠবে কোটি দর্শকের জন্য।
বলিউডের প্রবীণ ভক্তদের কাছে এই মুক্তি শুধু একটি সিনেমার নয়— এক যুগের শেষ আলো ধরে রাখার অনুভূতি।
ধর্মেন্দ্রকে নিয়ে বলিউডের স্মৃতিচারণ এগিয়ে চলছে। কেউ তার বিনয়ী আচরণ, কেউ অফস্ক্রিন ব্যক্তিত্ব, কেউবা অভিনয়ের জাদু নিয়ে লিখছেন। তার শেষ কাজটি তাই শুধু সিনেমা নয়— দর্শকদের কাছে স্মৃতি হয়ে থাকবে চিরকাল।
‘ইক্কিস’–এর মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়বে এক কিংবদন্তির উষ্ণ হাসি, দৃঢ় চোখ, আর অভিনয়ের সেই চিরচেনা সাবলীলতা। জীবনে যেমন, পর্দাতেও তিনি ছিলেন অনুকরণীয় এবং শেষবারের মতো সেটাই প্রমাণ করতে চলেছে তার শেষ চলচ্চিত্রটি।