শিল্পকলার মঞ্চে শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের ‘তৃতীয় একজন’
৭ নভেম্বর ২০২০ ১৬:২৫
করোনার ভয়কে জয়করে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের নাটক ‘তৃতীয় একজন’। সমীর দাশগুপ্ত’র রচনা ও অনন্ত হিরার নির্দেশনায় এই নাটকটি শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের ২০তম প্রযোজনা। আজ (শনিবার) সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মঞ্চে মঞ্চায়িত হবে নাটকটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক সামীর আর তার স্ত্রী তুলি শিক্ষিত, তথাপি গৃহিনী। একাকী, নিঃসঙ্গ এক নারী। তুলি এক সময় তুখোড় নৃত্য শিল্পী ছিলেন। ডক্টরেট শেষ করে ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন। একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে খুবই লোভনীয় চাকরি পেয়েও সামীরের আপত্তির কারণে চাকরি করা থেকে বিরত থেকেছেন।
তুলি যখন স্বামীর সংসারে চার দেয়ালে বন্দি, এক অস্তিত্বহীন সত্ত্বা হয়ে কেবলই ডানা ঝাপটাতে থাকেন— তখন সামীর ব্যস্ত নিজের ক্যারিয়ার আর লেখক হিসেবে নিজের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা গড়ে তোলার রেসে।
তৃতীয় একজন নাটকের গল্প হচ্ছে, সামীরের ব্যস্ততা এবং তুলির নিঃসঙ্গ একাকী জীবনের ভেতর তৃতীয় একজনের ঢুকে পড়ার গল্প। সেই তৃতীয় একজনের নাম বিবেক। তিনি তুলির পূর্ব পরিচিত। এই তৃতীয় একজন তুলির সঙ্গে একসময় একই গুরুর কাছে নাচ শিখতেন, তুলিকে খুবই পছন্দ করতেন। তুলি ডক্টরেট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে স্বপ্ন দেখতেন এবং সেই তৃতীয় একজন তুলির নাচ ছেড়ে দেওয়ার কারণে ভীষণ কষ্টও পেয়েছিলেন। সেই তৃতীয় একজন একদিন হঠাৎ করেই উপস্থিত হন তুলির বাসায় সামীরের অনুপস্থিতিতে এবং তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই আসতে থাকেন।
তুলির নিঃসঙ্গ একাকী গুমোট অন্ধকার জীবনে তৃতীয় একজন হঠাৎ করে উড়ে আসা এক জোনাকী। অজানা-অচেনা একজনের টেলিফোনে তুলির স্বামী ছুটে যান বাসায়। তৃতীয় একজনকে না পেলেও তৃতীয় একজনের ফেলে যাওয়া একটি কোট আবিস্কার করেন ড্রইং রুমের সোফার ওপর। ভেঙ্গে যায় সামীরের এতদিনের বিশ্বাস। ভালোবাসা-বন্ধন নষ্ট হয়ে যায় সামীরের। শুরু হয় দ্বন্দ্ব-সংঘাত-কলহ। নাটক এগিয়ে চলে নাটকীয় পরিণতির দিকে।
মানুষ মূলত একা, দুজন নিঃসঙ্গ একাকী মানুষের জীবনে তৃতীয় একজন মানুষের আবির্ভাবের ফলে সৃষ্ট এক তীব্র জটিল নাটকীয়তার নাটক ‘তৃতীয় একজন’।
‘তৃতীয় একজন’ নাটকটিতে অভিনয় করেছেন অনন্ত হিরা ও রওশন জান্নাত রুশনী। আলোক পরিকল্পনায় ঠান্ডু রায়হান, মঞ্চ পরিকল্পনায় আলি আহম্মেদ মুকুল, আবহসংগীতে রামিজ রাজু, পোশাক পরিকল্পনা নূনা আফরোজ, কোরিওগ্রাফি ইষ্টের সুমি এবং প্রযোজনা সমন্বয়কারী নাট্যজন খোরশেদুল আলম।