কিংবদন্তির চলে যাওয়ার ১ বছর
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৩০
তার লেখা গানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। কারণ বিশ হাজারেরও বেশি গানের গীতিকার তিনি। তার মধ্যে থেকে কিছু গানের কথা উল্লেখ করলে আন্দাজ করা যাবে তার প্রজ্ঞা ও দেশপ্রেম সম্পর্কে।
অসংখ্য দেশের গানের মধ্যে অন্যতম ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না ,আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’ , ‘জন্ম আমার ধন্য হল মা গো’ ।
‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘যার ছায়া পড়েছে’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’- এর মতো আধুনিক বা সিনেমার গান তার লেখনি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি দেশের প্রখ্যাত গীতিকার, পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। বিবিসি বাংলা তৈরিকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় রয়েছে তার লেখা তিনটি গান। ১৯৪৩ সালে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
১৯৬২-৬৩ সাল, তখন তিনি মেডিকেল কলেজে পড়েন। সে সময় লিখেছিলেন তার প্রথম গান। গানের কথা এমন ‘বুঝেছি মনের বনে রং লেগেছে’, যার সুর করেছিলেন নাজমূল হুদা বাচ্চু ও শিল্পী ছিলেন ফরিদা ইয়াসমিন।
১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানে গান লিখে ৫০ টাকা আয়ের মাধ্যমে তার পেশাদার গীতিকার জীবন শুরু। আর ১৯৬৫ সালে যুক্ত হন চলচ্চিত্রের সাথে। সুভাষ দত্তের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ ছবিতে ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’ গানটি দিয়ে চলচ্চিত্রের গান লেখা শুরু গাজী মাজহারুল আনোয়ারের।
তিনি একজন সফল কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকও। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘দেশ চিত্রকথা’। গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রযোজিত ও পরিচালিত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম শাস্তি, স্বাধীন, শর্ত, সমর, শ্রদ্ধা, ক্ষুধা, স্নেহ, তপস্যা, উল্কা, আম্মা, পরাধীন, আর্তনাদ, পাষাণের প্রেম, এই যে দুনিয়া।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ বার গীতিকার হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও ২০০২ সালে একুশে পদক, ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতি পদক, একাধিকবার বাচসাস পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে তার অর্জনে।
ঠিক এক বছর আগে এই দিনে জাতি হারিয়েছে এই কিংবদন্তিকে। ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যারা যান তিনি।
সারাবাংলা/এএসজি
গাজী মাজহারুল আনোয়ার বিশ হাজার গানের এক গাজী মাজহারুল আনোয়ার