স্মার্টফোন বর্তমানে আমাদের জীবনের একটি অংশে পরিণত হয়েছে। তাই এতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকিং, অফিসিয়াল নথি, এমনকি ব্যক্তিগত কথোপকথনের সবকিছুই থাকে হাতের মুঠোয় থাকা এই ছোট্ট ফোনটিতে। তাই বেশি চিন্তার বিষয় হলো হটাৎ যদি আপনার ফোনে থাকা তথ্য চুরি হয়ে যায় তাহলে?
আপনার ফোনটিই দেবে আবার আপনার ফোন থাকা তথ্যের সুরক্ষা। গুগল এনেছে এমনই এক চমকপ্রদ নতুন ফিচার — উন্নত সুরক্ষা মোড (Advanced Protection Mode), যা এসেছে অ্যানড্রয়েড ১৬-এর সঙ্গে।
এই নতুন ফিচারটি চালু করলেই ফোন ‘উচ্চ নিরাপত্তা মোডে’ চলে যায়। এটি একাধিক সুরক্ষা স্তর একসাথে সক্রিয় করে এবং ব্যবহারকারীকে ম্যানুয়ালি সেগুলো বন্ধ করার অনুমতি দেয় না। ফলে, ফোন সর্বদা সুরক্ষিত থাকে— এমনকি ভুলবশত আপনি কোনো বিপজ্জনক সেটিংস পরিবর্তন করলেও।
সাধারণত ব্যবহারকারীরা চাইলে প্লে প্রোটেক্ট (Play Protect) বন্ধ করতে পারেন, কিন্তু উন্নত সুরক্ষা মোড চালু থাকলে এটি বন্ধ করা সম্ভব নয়। এর ফলে ফোনের প্রতিটি অ্যাপ নিয়মিতভাবে স্ক্যান হবে এবং কোনো সন্দেহজনক বা ভাইরাসযুক্ত অ্যাপ ধরা পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে ব্লক হয়ে যাবে। এতে ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রবেশের সম্ভাবনা প্রায় শূন্যে নেমে আসে।
অনেকে ইন্টারনেট থেকে সরাসরি এপিকে (APK) ফাইল ডাউনলোড করে অ্যাপ ইনস্টল করেন, যা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু এই মোড চালু থাকলে অজানা উৎস (Unknown Sources) থেকে অ্যাপ ইনস্টল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। ফলে কোনো তৃতীয় পক্ষের সাইট থেকে ক্ষতিকর অ্যাপ বা তথ্য চুরিকারী সফটওয়্যার ফোনে ঢুকতে পারবে না।
ফোন চুরি হলেও থাকবে সুরক্ষিত। উন্নত সুরক্ষা মোডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো— যখন ফোন লক অবস্থায় থাকবে, তখন কেউই ইউএসবি (USB) পোর্ট দিয়ে কোনো তথ্য স্থানান্তর করতে পারবে না। ইউএসবি শুধু চার্জ দেওয়ার জন্য কাজ করবে, ডেটা ট্রান্সফারের জন্য নয়।
যদি ফোন চুরি হয়ে যায় বা অনেকক্ষণ লক অবস্থায় থাকে, তাহলে সিস্টেম নিজে থেকেই ফোনকে পুনরায় চালু (রিবুট) মোডে পাঠিয়ে দেয়। এতে ফোনের সমস্ত তথ্য ডিভাইস স্তরের এনক্রিপশন দ্বারা সুরক্ষিত থাকে এবং কেউই ফোন আনলক করতে পারে না। পাশাপাশি, ফাইন্ড মাই ডিভাইস (Find My Device) ফিচারকেও আরও উন্নত করা হয়েছে, যাতে ব্যবহারকারী দূর থেকেই ফোন লক বা অবস্থান নির্ধারণ করতে পারেন।
উন্নত সুরক্ষা মোড চালু করতে -প্রথমে আপনার ফোনে অ্যান্ড্রয়েড ১৬ ইনস্টল করতে হবে।
এরপর সেটিংস (Settings)-এ গিয়ে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা (Security & Privacy) বিভাগে যান।
সেখানে উন্নত সুরক্ষা (Advanced Protection) অপশনটি খুঁজে সেটি চালু করুন।
প্রয়োজনে ফোনটি পুনরায় চালু করুন।
এখন চাইলে অ্যাকাউন্ট সুরক্ষা (Account Protection) অপশনটিও সক্রিয় রাখতে পারেন, যা আপনার গুগল অ্যাকাউন্টকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেবে।