নতুন দিনের প্রত্যাশায়
৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ১১:০৩
মাকসুদা আজীজ
অ্যাসিস্টেন্ট এডিটর, সারাবাংলা
অগ্রহায়ণের ২২ তারিখ, ভোর ৬টা বেজে ২৬ মিনিটে সূর্য উঠে জানিয়ে দিল আজ আরও একটা নতুন দিন। আর এমন দিনেই শুরু হলো আমাদের সারাবাংলার পথ চলা। আমাদের প্রতিদিনের আয়োজনে আপনাদের জন্য থাকছে সারাদিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস, সঙ্গে জানবেন প্রতিদিনের আবহাওয়া উদ্যাপনের উপায়ও।
আজকে সকালে সূর্য উঠার ঠিক এক ঘণ্টা আগে দিনের তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন। আর সূর্যের আগমনী বার্তা জাগলেই তাপমাত্রা একটু একটু করে বাড়া শুরু করেছে। যেটা বেলা দুইটায় সর্বোচ্চ ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঠেকবে। তবে ২৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা একটা কাগুজে হিসাব, তাপমাত্রা শরীরে অনুভব হবে ৩০ ডিগ্রি।
৩০ ডিগ্রি কোনো শীতের তাপমাত্রা হলো? এই বছর তো শীতই পড়ল না; ‘শীত পরত আমাদের ছোটবেলায়, এখন শীত কই শুধুই গরম!’ এইসব কথা বলে লাভ নেই। একটা দেশের আবহাওয়া স্থিতিশীল রাখতে যেমন গাছ থাকা দরকার ছিল সেটা আর এখন বাংলাদেশে নেই। ঢাকাতে মোটেই নেই, কিছু এলাকায় দালানের পরে দালান উঠে এমন অবস্থা যে সবুজের বংশ নেই। ভয় হয় কবে না ঢাকার মানুষকে পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরতে হয়!
শুধু কী গাছের অভাব? এই যে গরমটা গায়ে লাগল কি-না লাগল ওমনি ননীর পুতুলের মতো গলে গিয়ে, ‘উফফ্ এসি ছাড়ো’র দলকে এবার তো জানতে হবে গরমে পুটুস-পুটুস এসি চললে শীত আর আসবে কীভাবে? এসি চলতে যে বিদ্যুৎ লাগে সেটা আসে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর মাধ্যমে। এটা হলে, কার্বনডাই অক্সাইড নির্গত হয়। এই কার্বনডাই অক্সাইড জমে জমে বায়ুমণ্ডল একটি স্বচ্ছ কাচ হয়ে গিয়েছে। এটা ভেদ করে গরম বের হতে পারে না।
আবার এসির কমপ্রেসারে যে গ্যাস থাকে সেটাও ওজোন স্তর ক্ষয়ের জন্য দায়ী। ফলে সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মিও বায়ুমণ্ডলে ঢুকে যায় হুড়মুড় করে। একটা সময় একে ছাতা দিয়ে আটকানো যাবে না, সানস্ক্রিনেও মানবে না সে দিনটার জন্য আমরা প্রস্তুত তো?
সূর্যের অবস্থান এখন দক্ষিণ গোলার্ধে। সূর্য তীর্যকভাবে কিরণ দেয়। দূরবর্তী স্থান থেকে কিরণ দেওয়ার কারণে সূর্যের তাপমাত্রা এখন কম আসে। তা ছাড়া বেশি ঘনত্বের দিক খেকে বায়ু কম ঘনত্বের দিকে যায়। তাই শীতের প্রভাব আনতে বেশ কিছুদিন থেকেই উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিক থেকে শীতল বাতাস আসছে। এই বাতাসের বেগ মৃদু ৬ থেকে ৯ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। তবে এই বাতাস দিয়ে ঢাকার পরিবেশ অন্তত ঠাণ্ডা হচ্ছে না। তাই হালকা গরম কাপড় রাখতে পারেন। যদি খুব ভোরে বের হতে হয় অথবা ফিরতে বেশ দেরি হয় তবে অবশ্যই একটু ভারি কাপড় রাখতে হবে।
আজকের আকাশে এমনিতে মেঘের কোনো খবর নেই। সম্ভাবনা আছে সামনেই বৃষ্টি হতে পারে। তবে আজকের দিন বৃষ্টি হবে না সেটা এক রকমের নিশ্চিত। তাও যদি কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয় সাথে ছাতা রাখা ভালো, দিনের বেলা সূর্যের সাথে যুঝতে সুবিধা হবে। অতিবেগুনি রশ্মির সারণিতে দেখা যাচ্ছে বেলা ১টায় অতিবেগুনি রশ্মির প্রকোপ ৪ এ পৌঁছবে। তখন যদি খোলা জায়গায় থাকা পরে, ছাতা মেলে ফেলাই ভালো।
সূর্য আজকে ৫টা বেজে ১১ মিনিটে ডুবে যাবে, আজকে সূর্যের দর্শন মাত্র ১০ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট পাওয়া যাবে। এদিকে চাঁদের কৃষ্ণপক্ষ চললেও মাত্র তৃতীয় তিথি। তাই চাঁদের দেখা অনেক সময় পাওয়া যাবে, প্রায় ১৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিট আকাশে দেখা যাবে। তবে রাতে ৮টা ১২ তে উঠে সকালে সূর্য উঠার পরে ৯টা ৫২ তে ডুবে যাবে তো। সকালের আলোতে একটু কম কমই দেখতে পাওয়ার কথা।
আপনাদের সারাদিন নিরাপদে কাটুক, আপনারা যেন আপনাদের সামনের দিনগুলোও নিরাপদ ও আনন্দ রাখার মতো কাজ করতে পারেন।
সারাবেলা সারাক্ষণ সারাবাংলার সাথেই থাকুন।
সারাবাংলা/এমএ/আরসি/জেডএড