Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থবছরের ৯ মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি


৭ এপ্রিল ২০১৯ ২০:৫৬

ঢাকা : চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ( জুন-২০১৮ থেকে মার্চ-২০১৯) রেমিটেন্স এসেছে ১ হাজার ১৮৬ কোটি ৮২ লাখ মার্কিন ডলার। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১০ কোটি ৭২ লাখ ডলার বা ১০ দশমিক তিন শতাংশ বেশি। অন্যদিকে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুন-১৭ থেকে মার্চ-১৮) পর্যন্ত নয় মাসে রেমিটেন্স আসে এক হাজার ৭৬ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিটেন্সের সর্বশেষ হালনাগাদে এ চিত্র উঠে আসে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ ব্যাপারে সারাবাংলাকে বলেন, ‘হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া নানা উদ্যেগের সুফল পাওয়া যাচ্ছে রেমিটেন্সে। ফলে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।’

রেমিটেন্স বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশেষ করে অবৈধ হুন্ডি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি বছরের প্রথম থেকেই রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ছে। গত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ ১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে রেমিটেন্স কিছুটা কমে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলারে নামলেও মার্চে তা আবার বেড়েছে। মার্চ মাসে রেমিটেন্স আসে ১৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এটি বাংলাদেশে রেমিটেন্সের ইতিহাসে একমাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স।

এর আগে ২০০৪ সালের জুলাই মাসে ১৪৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স আসে। গত জানুয়ারির আগ পর্যন্ত ওটাই ছিল এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স। বতর্মানে তা  দ্বিতীয় সর্বোচ্চতে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ এই তিন মাসে মোট রেমিটেন্স আসে ৪৩৬ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার। বছরের প্রথম তিন মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ৪৬ কোটি ৯৩ লাখ মার্কিন ডলার। বিপরীতে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স আসে ১৩৭ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেমিটেন্স আসে ১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার, মার্চে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। গত বছরের প্রথম তিন মাসে রেমিটেন্স আসে ৩৮৪ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলার।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের মধ্যে গত জুলাই মাসে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠায় ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগস্টে ১৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১১২ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, নভেম্বর ১১৮ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১২৩ কোটি ডলার, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১৫৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ১৩১ কোটি ৭৭ লা্খ ডলার এবং মার্চে ১৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালে দেশে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলার এবং ২০১৫ সালে রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার।

অন্যদিকে অর্থবছর হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স আসে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১ হাজার কোটি ১৮৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটির বেশি বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রেমিটেন্স পাঠানো শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব। এরপর রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।

সারাবাংলা/জিএস/একে

অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর