ডেডলাইন ২৮ ডিসেম্বর: সহিংসতার ছক বিএনপি-জামায়াতে, টার্গেটে পুলিশ
২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:০২
||জামশেদ নাজিম, বিশেষ সংবাদদাতা||
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী শক্তি ভোটের আগেই বড় ধরনের সহিংসতা চালানোর লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বরকে শেষ টার্গেট ধরে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে তারা।
গোয়েন্দারা জেনেছেন, পুলিশ বাহিনী, দেশের উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা এমনকি বিদেশি কূটনৈতিকদের হত্যার ষড়যন্ত্র ও ছক রয়েছে বিএনপি-জামায়াতের হাতে।
একাধিক দায়িত্বশীল গোয়েন্দা সুত্র সারাবাংলাকে এতথ্য জানিয়েছে।
পুলিশ তথা অন্য বাহিনীগুলোর উর্ধ্বতনরা বলছেন, তারা বিষয়গুলো জানতে পেরে সহিংসতা প্রতিহত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন ও নিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, এখনো নির্বাচনি প্রচারে না নেমে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সহিংস করে তোলার প্রচেষ্টায় রয়েছে বিএনপি-জামায়াত। ২৪ ডিসেম্বর (সোমবার) নির্বাচনী মাঠে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করবে তারা। ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ করার ঘোষণা রয়েছে। ওই সমাবেশের পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলার চেষ্টা চলবে এবং ২৮ ডিসেম্বরকে শেষ টার্গেট হিসেবে রাখা হয়েছে।
গোপন পরিকল্পনা জানতে পেরেছেন এমন একাধিক দায়িত্বশীল গোয়েন্দা কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, সহিংসতার পরিকল্পনা রাজধানীসিহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতেও রয়েছে । তবে ঢাকাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই পরিকল্পনায়।
সূত্র জানায়, সে কৌশলগত কারণেই ২৭ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ডাকা হয়েছে। কৌশলের বিস্তারিত বর্ণনায় তারা জানান, সমাবেশে ঢাকার বাইরে থেকে অনেক নেতা-কর্মী সমর্থক আনা হবে। তবে সমাবেশের পর তাদের বড় একটা অংশ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়বেন। যারা ২৮ ডিসেম্বর সকাল থেকে জড়ো হবেন পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখান থেকে বড় আকারের শো-ডাউনের পর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন অভিমুখে যাত্রা শুরু করবে। যাত্রার সময়কালেই নাশকতার চেষ্টা চালানো হবে।
প্রধানতম টার্গেটে থাকবে পুলিশ, পরিকল্পনায় সেটাই ভাবা হচ্ছে বলে জানালেন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দিয়ে তাদের ভেতর আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা থাকবে বিএনপি-জামায়াতের। অতীতেও দলের নেতা-কর্মীরা একই কৌশল নিয়েছিলো, জানিয়ে ওই কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ওই দিন পুলিশের সাথে সংঘর্ষের পরিকল্পনা রয়েছে এই সহিংস জোটের। তবে ঢাকার পাশাপাশি বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও সিলেট এলাকায় মিছিল করে পুলিশের ওপরে হামলার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।
সূত্র জানায়, পরিকল্পনাকারীরা ভেবে রেখেছেন সারাদেশে যখন সহিংসতা শুরু হবে ঠিক তখনই জঙ্গিদের দিয়ে হামলার জন্য আলাদা একটি গ্রুপকে কাজে লাগানো হবে।
আগেভাগেই টার্গেটেড হত্যার তালিকা জঙ্গিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। হত্যার ওই তালিকায় পুলিশ, বিজিবি, বিচারক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, বিদেশি কুটনীতিক ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশ সদর দফতর থেকে এরই মধ্যে ওইসব কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষায়িত পোশাক পরে দায়িত্ব পালন করার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে এ প্রস্তুতি চলছে।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা সারাবাংলাকে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জনগণের নিরাপত্তার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশদের আমরা প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশন দিয়েছি। জান-মালের রক্ষা ও নিজের নিরাপত্তার জন্য ফায়ারিংসহ সব ধরণের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নাশকতা করতে পারে এমন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর তালিকা ধরে কাজ চলছে।
সারাবাংলা/এমএম