ঢাকা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, প্রাণিসম্পদখাতে আরও বেশি করে কিভাবে প্রণোদনা দেয়া যায়, তা সরকার আন্তরিকভাবে বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, দুধ বর্তমানে শুধু একটি পণ্য নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ। এজন্য আমাদের মায়েরা বলে থাকেন আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।
রোববার (১ জুন) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) তে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস -২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের প্রাণিসম্পদ খাতের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মসংস্থানের আহ্বান জানিয়েছেন।
উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধারা কিছুদিন আগেও শক্তি সামর্থ্য ও কর্মক্ষম ছিল। আহত হওয়ার কারণে তারা যেন আমাদের মূল স্রোতের বাইরে চলে যেতে না পারে সেজন্য তাদেরকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমাদেরকেই করতে হবে ।
তিনি বলেন, একটি পত্রিকা মারফত আমরা জানতে পেরেছি প্রতিবছর এক লাখ ১৮ হাজার টন গুঁড়ো দুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এই আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে আমাদেরকে প্রতিবছর ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়। আগামীতে যাতে এই ধরনের দুধ আমদানি করতে না হয় এবং বাংলাদেশে উন্নত মানের দুধ উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এতে একদিকে যেমন বিদেশি আমদানি কমবে তেমনি ভাবে আমাদের দেশের খামারিরা উপকৃত হবে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সরকার কৃষি খাতে যদি ভর্তুকি দিতে পারে, খামারিদের ক্ষেত্রে কেন পারবেনা। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মহিষের দুধের ব্যাপক উৎপাদন করে থাকে। মহিষের দুধ তেমন না চললেও মহিষের দুধের প্রতি কিন্তু মানুষের একটা চাহিদা রয়েছে। এছাড়া ছাগলের দুধে ঔষধি গুণ রয়েছে। তাই আগামীতে দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বনির্ভরতা অর্জন করবে এমন উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করবে।
এর আগে সকালে উপদেষ্টা রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শাখার ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল মিল্ক ফিডিং এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন এবং দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন করেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন। ‘দুগ্ধের অপার শক্তিতে, মেতে উঠি এক সাথে’ এবারের বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের এ প্রতিপাদ্যের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. রায়হান হাবিব, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আরিফুল ইসলাম। খামারি প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যকে নিরাপদ পুষ্টির অন্যতম উৎস্য হিসেবে সকল মহলে জনপ্রিয় করা, সেক্টরের উন্নয়নে জনাকর্ষণ বাড়ানো, বিনিয়োগ আকর্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রচারনার জন্য বাংলাদেশে এই দিবস পালন করা হয়।