সিলেট: সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিবেশ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়ে সারওয়ার আলম বলেছেন, সিলেট হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা। প্রকৃতি কন্যা যেন প্রকৃতির মতো থাকে। তিনি আরও বলেন, যদি আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকেন, জনগণ সঙ্গে থাকে, তাহলে আমাকে যেমন দেখেছেন, আমি এখনো তেমনই আছি, তেমনই থাকব।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টায় সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে পৌঁছান তিনি। এ সময় তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরে তিনি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালাবিষয়ক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। এ সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারওয়ার আলম বলেন, ‘এটি আমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয় যে পুণ্যভূমির জেলা প্রশাসক হিসেবে সরকার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। যোগ্য মনে করেছে বলেই দায়িত্ব দিয়েছে। আমি চেষ্টা করব আমার সর্বোচ্চ দিয়ে এই জেলার জন্য এবং মানুষের জন্য কাজ করে যেতে।’
সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্ব পালনের জন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা চাই। আশা করছি সবাই মিলে যখন কাজ করব, তখন সিলেট একটি সুন্দর জেলায় পরিণত হবে এবং সবাই এর সুবিধাভোগী হবেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব—সবাই যেন নিয়ম মানে ও আইন মানে। আমি সে চেষ্টা করব।’
নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখানে বেশ কয়েকটা বিষয়ে আমার অগ্রাধিকার থাকবে— আইন-শৃঙ্খলা, পরিবেশ, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য। সব কাজেই গুরুত্ব থাকবে। তবে এই কয়েকটা কাজে আমার বিশেষ মনোযোগ থাকবে।’
সিলেটের পর্যটন নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে সবই হবে, উন্নয়ন হবে, তবে তা হতে হবে টেকসই। কোনোভাবেই পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয়। সিলেট যেহেতু একটা পর্যটন এলাকা, প্রচুর পর্যটক আসেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। কোনোভাবেই যেন প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
উল্লেখ্য, সাদাপাথরসহ সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বেপরোয়া পাথর লুটে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে ওএসডি করা হয় সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে। তার জায়গায় নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান সারওয়ার আলম। তিনি এর আগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
উল্লেখ্য, ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা সারওয়ার আলম ২০০৮ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। পরে দীর্ঘ সময় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ভেজালবিরোধী অভিযানে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন। সাধারণ মানুষের আস্থা ও প্রশংসা কুড়িয়ে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচ্ছন্ন প্রশাসনের প্রতীক।