বরিশাল: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মোহাম্মদ বারিউল করিম খান সই করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই কর্মকর্তাকে তার নামের পাশে বর্ণিত পদে বদলি পূর্বক নিয়োগ করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
গত বছর গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রাহুল চন্দ ঢাকার সাভারে ইউএনও হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্কুলছাত্র আলিফ আহমেদ হত্যা মামলায় আসামি। হত্যা মামলায় আসামি হওয়ার পর বিসিএস ৩৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাজাপুরের ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন।
জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে স্কুলছাত্র আলিফ আহমেদকে (সিয়াম) গুলি করে হত্যার অভিযোগে চলতি বছরের ৬ জুন সাভার থানায় একটি মামলা করেন আলিফের বাবা বুলবুল কবির। মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার ৫ নম্বর আসামি সাভারের তৎকালীন ইউএনও রাহুল চন্দ।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ঢাকামুখী লংমার্চে অংশ নেওয়ার জন্য ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে তার ছেলে আলিফ আহমেদসহ স্কুলের শিক্ষার্থীরা মিছিলে অংশ নেয়। মিছিলটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গেলে দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে পুলিশ নির্বিচার গুলিবর্ষণ করলে আলিফ গুলিবিদ্ধ হয়। পরে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট আলিফ মারা যান। ইউএনও রাহুল চন্দের নির্দেশে পুলিশ গুলি চালায় এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
ইউএনও রাহুল চন্দ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। এ বিষয়ে বলার কিছুই নেই।’
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, ‘রাজাপুরের ইউএনও রাহুল চন্দকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এটা সরকারের বিষয়। এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য করা যাবে না।’
এদিকে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজাপুর উপজেলা পরিষদের সামনে ইউএনও রাহুল চন্দকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজপুর উপজেলাবাসী। এতে বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া সুমন, উপজেলা ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি জাহিদ মাস্টার, উপজেলা জামায়াতের আমির কবির হোসেন ও জুলাই যোদ্ধা মো. মূসা প্রমুখ।