Saturday 23 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সামান্য মনোমালিন্যের জেরে চোর সাজিয়ে কিশোরকে হত্যা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ আগস্ট ২০২৫ ১৮:২৩ | আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৫ ২১:৪৪

ফটিকছড়িতে রেলিংয়ের সঙ্গে বেঁধে এক কিশোরকে হত্যা ও দু’জনকে আহত। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে বেঁধে এক কিশোরকে হত্যা ও দু’জনকে আহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতার দু’জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

পুলিশ জানায়, তুচ্ছ মনোমালিন্যের জেরে পরিকল্পিতভাবে তিন কিশোরকে ধরে চোর অপবাদ দিয়ে বেধড়কভাবে পেটানো হয়। তবে কী নিয়ে মনোমালিন্য হয়েছিল, সেটা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোরে উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে চেইঙ্গার ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে নিহত রিহান উদ্দিন মাহিন (১৫) ওই গ্রামের মুহাম্মদ লোকমানের ছেলে। আহত সমবয়সী মুহাম্মদ রাহাত ও মুহাম্মদ মানিকের বাড়িও একই গ্রামে।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ফটিকছড়ি থানায় মামলা করেন নিহত কিশোরের মা খাদিজা বেগম। এতে অজ্ঞাতনামা আরও সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন- নাজিম উদ্দিন, মুহাম্মদ নোমান, মুহাম্মদ আজাদ মোহাম্মদ তৈয়ব ও মহিউদ্দিন। তাদের বয়স ২২-২৩ বছরের মধ্যে। তারাও একই গ্রামের বাসিন্দা।

ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর আহমদ সারাবাংলাকে জানান, শুক্রবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে নোমান ও আজাদকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে নোমান মামলার দুই নম্বর ও আজাদ তিন নম্বর আসামি।

হত্যাকাণ্ডের কারণ জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘যে তিনজনকে পেটানো হয়েছে তারা সমবয়সী বন্ধু। আবার যে পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে তারাও সমবয়সী বন্ধু। এদের সবার বাড়ি একই গ্রামে, একই পাড়ায়। নিহত মাহিন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। এরপর গ্রামে তার বাবার মুদি দোকানে বসতো।’

‘গ্রেফতার দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাদের সঙ্গে মাহিনের মনোমালিন্য হয়েছিল। কী কারণে মনোমালিন্য হয়েছিল, সেটা তারা খোলাসা করেনি। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে দু’জন স্বীকার করেছে যে, তারাই প্রথমে তিন কিশোরকে ধাওয়া দিয়ে ধরেছিল এবং পরে ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে বেঁধে রাখে। আমরা নিশ্চিত হয়েছি, মামলায় যে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারাই পরিকল্পিতভাবে তিন কিশোরকে চোর অপবাদ দিয়ে গণপিটুনির পরিস্থিতি তৈরি করে।’

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, মাহিন ও তার দুই বন্ধু ঘটনার দু’দিন আগে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। শুক্রবার ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে তারা গ্রামে ফিরে আসেন। ঘরে যাওয়ার আগে ভোর ৫ টার দিকে তারা চেইঙ্গার ব্রিজে বসে কথা বলছিলেন। তখন কাছের একটি দোতলা ভবনের ছাদে চোর উঠেছে বলে চেঁচামেচি শুরু হয়। পরে আশপাশের প্রতিবেশিরা চেঁচামেচি শুনে জড়ো হতে থাকেন।

এক পর্যায়ে সেতুর ওপর বসা মাহিন, রিফাত ও মানিককে লক্ষ্য করে চোর, চোর বলে চিৎকার করতে থাকেন গ্রেফতার হওয়া নোমান ও আজাদসহ কয়েকজন তরুণ। তখন তিন কিশোর দৌড়ে একটি ভবনে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করেন। তাদের ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলে নোমান ও আজাদ। পরে সবাই মিলে সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এতে মাহিন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত দু’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

কিশোর টপ নিউজ রেলিংয়ে বেঁধে হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর