ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে চালানো এই হামলায় ইউক্রেন সরকারের মন্ত্রিসভা ভবনসহ বহু আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় জরুরি বিভাগ অন্তত একজনের মৃত্যু ও ১৮ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষে দারনিতস্কির একটি চারতলা ভবন ও একাধিক উঁচু ভবনে আগুন লাগে।
প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিদেনকো বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সরকারের মূল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ছাদ ও উপরের তলাগুলো আংশিক ধ্বংস হয়েছে। আমরা ভবন মেরামত করতে পারব, কিন্তু হারানো প্রাণ ফেরানো যাবে না।’ তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, এক রাতে রাশিয়া ৮০৫টি ড্রোন ও ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। কিয়েভ সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো টেলিগ্রামে জানান, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করেছে।
দেশজুড়ে আকাশ প্রতিরক্ষা সতর্কতা জারি থাকায় অধিকাংশ অঞ্চলেই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কেন্দ্রীয় শহর ক্রেমনচুকে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নিজ শহর ক্রিভি রিহসহ ওডেসা ও সুমি অঞ্চলেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার ব্রায়ান্সক অঞ্চলে দ্রুজবা তেল পাইপলাইনে আক্রমণ চালিয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে। এই পাইপলাইন রাশিয়ার তেল হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ায় সরবরাহ করে।
রাশিয়া এখনও এসব হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ দাবি করেছে, অন্তত ৬৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরকে বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করে আসছে। যুদ্ধের তিন বছরেরও বেশি সময়ে হাজারো বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।