নেপালে চলমান ‘জেন-জি’ বিক্ষোভের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানালের স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকর মারা গেছেন। বিক্ষোভকারীরা তার কাঠমান্ডুর ডাল্লু এলাকার বাড়িতে তাকে অবরুদ্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
পরিবারের সূত্র অনুযায়ী, চিত্রকরকে কীর্তিপুর বার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা যান।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর স্বল্পকালীন নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করলে এবং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও দুর্নীতির অভিযোগের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন। তার নিজের বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-নেপালের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের গুঞ্জন
বিক্ষোভের সময় এক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু প্রসাদ পাউডেলকে (৬৫) রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তায় তাড়া করে মারধর ও লাথি মারা হচ্ছে।
তরুণদের নেতৃত্বে চলা এই বিক্ষোভের প্রথম দিন পুলিশ গুলি চালালে ১৯ জন নিহত হয়। যদিও সোমবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়, তবুও বিক্ষোভ চলতে থাকে। বিক্ষোভকারীরা কিছু শীর্ষ নেতার বাড়ি ও সংসদ ভবনেও আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঠমান্ডুর বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং কিছু মন্ত্রীকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-পদত্যাগপত্রে যা লিখেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী
এই বিক্ষোভ ‘জেন-জি’ প্রতিবাদ নামে পরিচিত। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নিবন্ধন ও সরকারি তত্ত্বাবধানে না আসায় তারা ফেসবুক, এক্স ও ইউটিউবসহ বেশ কিছু প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করেছিল। তবে এই প্ল্যাটফর্মগুলো আবার চালু হওয়ার পরেও আন্দোলন থেমে থাকেনি। কারণ, পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু এবং সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এই আন্দোলনকে আরও জোরালো করেছে।
বিশেষ করে, তরুণদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। তারা মনে করে, রাজনৈতিক নেতাদের সন্তানরা (নেপো কিডস) বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে এবং অনেক সুবিধা ভোগ করছে, যেখানে অধিকাংশ তরুণ চাকরি খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে।
আরও পড়ুন-হেলিকপ্টারে করে সরানো হচ্ছে নেপালের মন্ত্রীদের
নেপালের এই অস্থির পরিস্থিতির কারণে ভারত তার নাগরিকদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশটিতে ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানিয়েছে। এই সহিংসতার কারণে মঙ্গলবার এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো এবং নেপাল এয়ারলাইন্স দিল্লী থেকে কাঠমান্ডুগামী তাদের ফ্লাইট বাতিল করে।