ঢাকা: এক শিশু মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক টলি বহনকারীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মেডিকেলের স্টাফরা শিশুর স্বজনদের মারধর করে পুলিশে দেয়। এতে তাদের দুইজন আহত হয়।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে হাসপাতালের ২য় তলায় ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
টলি বহনকারীর নাম জুয়েল (২৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২১০ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত আনসার সদস্য আব্দুল্লাহ জানান, সাড়ে ৮টার দিকে এক শিশুকে নিয়ে আসে। চিকিৎসক দেখে মৃত বলে জরুরি বিভাগে পাঠিয়ে দেয়। এ সময় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের ওপর ক্ষেপে যায় এবং মারধর করতে উদ্দত হয়। পরে সেখান থেকে জরুরি বিভাগ এসে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় ভুল চিকিৎসায় তাদের রোগীকে মেরে ফেলেছে।
জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত আনসার সদস্য সাকিব জানান, জরুরি বিভাগ দিয়ে শিশুটিকে বের হওয়ার সময় মৃতের কাগজ চাওয়া হয়। তখন রোগীর স্বজনরা তাকে মারতে তেড়ে যায়। এ সময় জুয়েল এগিয়ে আসলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন মিলে জুয়েলকে মারধর করে। মারতে মারতে জরুরি বিভাগের সামনে থেকে নতুন ভবনের সামনে নিয়ে যায়। এ সময় হাসপাতালের অন্যান্য স্টাফরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এদিকে মৃত শিশুটির ফুফু সিমরান জানান, তাদের বাসা বংশাল সাত রওজা বাংলাদেশ মাঠ এলাকায়। শিশুর নাম সাফওয়ান (৪)। দীর্ঘদিন ধরে কিডনীর সমস্যায় ভুগতেছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল। আজকে সন্ধ্যার দিকে বাসায় হঠাৎ খারাপ অনুভব করায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।
সিমরান অভিযোগ করেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা কোনো চিকিৎসা দেয়নি। এজন্য সাফওয়ান মারা গেছে। এ ছাড়া সাফওয়ানের বাবা সামির ও তার বন্ধু সোয়েব হোসেনকে মারধর করেছে।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো কথা বলেননি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাটুন কমান্ডার মো. সেলিম মিয়া জানান, এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ২১০ নম্বর ওয়ার্ডের দরজা ভাঙচুর করে এবং দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকদের মারতে যায়। এরপর জরুরি বিভগের এক দায়িত্বরত আনসার সদস্যকে মারতে যায় শিশুটির স্বজনরা। এ সময় এক ট্রলিম্যান এগিয়ে আসলে তাকে বেরধরক মেরে আহত করে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, রাতে হাসপাতালে শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক ট্রলিম্যানকে মারধর করে রোগীর স্বজনরা। এ সময় উত্তেজিত হয়ে অন্যান্য স্টাফরা রোগীর দুই স্বজনকে মারধর করে আটকে রাখে। পরে তাদেরকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হাসপাতালের পরিবেশ শান্ত আছে।’