নওগাঁ: বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার মহাদশমী। দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। নওগাঁয় দুর্গা পূজামণ্ডপগুলোতে এখন বাজছে দেবীর বিদায়ের ঘণ্টা। মণ্ডপগুলোতে সকালে শুরু হয় অঞ্জলি দেওয়া। ভক্তরা দলে দলে এসে অঞ্জলি দেন।
এরপর একদিকে বিসর্জনের বিষাদ, অন্যদিকে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন নারী ভক্তরা। জীবনকে রঙিন করে রাঙিয়ে তুলতে প্রতিটি পূজামণ্ডপে ছিল নারীদের এই উৎসব। এ সময় ঢাকের বাদ্যে পরিবেশ হয়ে ওঠে আনন্দমুখর। একযোগ সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।
বৃহষ্পতিবার (২ অক্টোবর) নওগাঁ শহরের পূজামণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ভক্তরা পূজামণ্ডপগুলোতে আসতে শুরু করে। তখন পূজামণ্ডপগুলোতে চলছিল দশমীর বিহিত পূজা আর দর্পণের আনুষ্ঠানিকতা। যখন পূজা চলছিল, তখন প্রতিমার সামনে নারীদের হাতে হাতে থাকা প্লেটে সিঁদুর আর অঞ্জলি। পূজা অর্চনার পর কেউ কেউ শেষবারের মতো দেবী দুর্গার সিঁথিতে লাগিয়ে দেন সিঁদুর। এরপরেই সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন নারীরা। এ সময় একে অপরের গালে–মুখে সিঁদুর মেখে আগামী দিনের জন্য শুভকামনা জানান। বিবাহিত নারীদের পাশাপাশি তরুণী ও শিশুদেরও সিঁদুর খেলায় অংশ নিতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে স্বামী-সন্তানের মঙ্গল কামনা করেন তারা।
শহরের শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালী মন্দির (শিব মন্দির) সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠা সুস্মিতা সাহা, পারিমিতা রায়, নন্দিনী দাস বলেন, এবার অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। সেই সঙ্গে উৎসবমুখর ছিল প্রতিটি পূজামণ্ডপ। দেবীর বিদায়ে আমাদের সিঁদুর খেলায় যেন অন্য রকম এক ভালোবাসা ফুটে ওঠে। এই দিনের জন্য তারা অপেক্ষায় থাকেন। তাই সবাই বিজয়া দশমীতে মায়ের বিদায় বেলার আগ মুহূর্তে মায়ের আশীর্বাদ নিতে এসেছেন। সে সঙ্গে অতীত জীবনের পাপমোচন ও অশুভ শক্তির কবল থেকে বাঁচতে দেবী দুর্গার কাছে আশীর্বাদ কামনা করছেন, যেন সারা বছর পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দে থাকতে পারেন।
এদিকে প্রতিবছরের মতো এবারও দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে নওগাঁ শহরের মাঝ দিয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীতে নৌশোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। দুপুরের পর থেকেই প্রতিমাগুলোকে নৌকায় তোলা শুরু হয়। এরপর বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয় নৌশোভাযাত্রায়। সন্ধ্যায় ছোট যমুনা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করা হবে। এ বছর নওগাঁ জেলায় ৮০১টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছে।