চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ৮০ শতাংশ কোচিং সেন্টার সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়ে পোস্টার-ব্যানার লাগায় বলে আক্ষেপ করেছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়া দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে লাগানো ব্যানার-পোস্টার দ্রুত অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ পোস্টার, ব্যানার, সাইনবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে নেমে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন মেয়র। এদিন নগরীর কাজীর দেউড়ি, চেরাগি পাহাড়, আন্দরকিল্লা, লালদিঘী ও চকবাজার এলাকায় অভিযান চালায় চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের একাধিক টিম।
সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া কাউকে পোস্টার-ব্যানার ও সাইনবোর্ড লাগাতে দেওয়া হবে না জানিয়ে সিটি মেয়র বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠান কোনো অনুমতি ছাড়াই অসংখ্য ব্যানার টানিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান অন্যদেরও উৎসাহিত করছে অবৈধভাবে ব্যানার টানাতে। আমরা চাই তারা যেন দ্রুত সিটি করপোরেশনের অনুমতি নেয়, আইন মেনে চলে। যারা অনুমতি ছাড়া ব্যানার-পোস্টার টানাচ্ছে, তারা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলো সরিয়ে ফেলে। ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের পোস্টার, ব্যানার বা সাইনবোর্ড টানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিটি করপোরেশন থেকে অনুমতি না নিয়ে কেউ যেন ব্যানার-পোস্টার না লাগায়। যদি কেউ বিজ্ঞাপন দিতে চায়, তাহলে সেটা অনুমতি নিয়ে দেবে। আমরা চাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার কিংবা ব্যক্তিগত ব্যবসা সবকিছুই আইনের আওতায় আসুক। যত্রতত্র ব্যানার-পোস্টার বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সৌন্দর্য নষ্ট না হয় এবং ব্যবসায়ীরাও নিয়ম মেনে প্রচার করতে পারবেন।’
কোচিং সেন্টারগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ে আক্ষেপ জানিয়ে মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘৮০ শতাংশ কোচিং সেন্টার কোনো অনুমতি ছাড়াই পোস্টার-ব্যানার লাগায়। মাত্র ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান নিয়ম মেনে করপোরেশনের অনুমোদন নেয়। এতে সিটি করপোরেশন বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। অথচ একটি ব্যানারের জন্য মাত্র এক-দুই হাজার টাকা কর দিলেই যথেষ্ট। সেই অর্থ দিয়েই করপোরেশন শহরকে পরিষ্কার ও সবুজ রাখতে কাজ করে।’
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে লাগানো ব্যানার-পোস্টার দ্রুত অপসারণের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পূজার সময় অনেকেই শুভেচ্ছা ব্যানার দিয়েছেন। সেগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পূজার পর এখন এসব ব্যানার সরিয়ে ফেলতে হবে। আমরা প্রতিটি উৎসবকে সম্মান করি, তবে শহরের সৌন্দর্যের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
মেয়র বলেন, ‘ক্লিন সিটি গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা চাই, এই শহরকে সুন্দর রাখতে সবাই যেন সচেতন হয়। শহরের সৌন্দর্য রক্ষা করতে হলে নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। আমি নিজেই প্রতি মাসে অন্তত একবার মাঠে নেমে অভিযান পরিচালনা করি। কারণ, ব্যানারের কারণে কত সুন্দর দৃশ্য ঢেকে গেছে, সবুজ গাছপালা, রাস্তার সৌন্দর্য! এসব সরানোর পরই বোঝা যায় শহর কত সুন্দর হতে পারে।’
অভিযানে মেয়রের সঙ্গে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফ ছিলেন।