রংপুর: রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় এক হৃদয়বিদারক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে ওবায়দুল মিয়া (২৮) নামের এক যুবককে লাঠি-রড দিয়ে পেটানোর পর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে উপজেলায় বড় আলমপুর ইউনিয়নের পাটগ্রাম আদিবাসীপাড়ায় এই নিষ্ঠুরতার ঘটনা ঘটে। আহত ওবায়দুল রায়পুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ওসমান আলীর ছেলে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং সে এখন চিকিৎসাধীন।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওবায়দুলের সঙ্গে পাটগ্রাম আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দা জসেদ মারান্ডির দীর্ঘদিনের সখ্য ছিল। এছাড়া তাদের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও চলত। শনিবার রাতে ওবায়দুল জমি বিক্রির টাকা সঙ্গে নিয়ে গরু কিনতে হাটে যাওয়ার অজুহাতে বাড়ি থেকে বের হন। জসেদের বাড়িতে গিয়ে তাকে ঘরে আটকে প্রথমে পরিবারের সদস্যরা মারধর শুরু করে। পরে বাড়ির বাইরে নিয়ে এসে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রড ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পেটায়। একপর্যায়ে তরলজাতীয় পদার্থ ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, যা তাঁর গায়ে পোড়ার আঘাত সৃষ্টি করে।
ওবায়দুলের ভাই আশরাফুল মিয়া বলেন, আমার ভাইয়ের সঙ্গে জসেদের আগে থেকেই লেনদেন ছিল। ঘটনার দিন তাকে ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে এমন নির্যাতন করা হয়েছে। গলা থেকে সোনার চেইন, গরু কেনার টাকা এবং অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
পরে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওবায়দুলকে উদ্ধার করে। রাতেই তাকে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা বলেছেন, পোড়া ও আঘাতের কারণে তার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশের আসার সংবাদ পেয়ে জসেদ মারান্ডি ও তার পরিবারের সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। রোববার রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে স্থানীয় সূত্র থেকে খবর পেয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’