Saturday 18 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংবাদ সম্মেলন
প্রস্তাবিত ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলায় যেতে চায় না সুয়াবিলের মানুষ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ অক্টোবর ২০২৫ ২২:১২

‘সুয়াবিল অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের’ সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ নামে নতুন এক উপজেলা গঠনের প্রস্তাবে বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়ে আপত্তি উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রস্তাবিত এ উপজেলার সঙ্গে ফটিকছড়ির সুয়াবিল ইউনিয়ন এবং নাজিরহাট পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডকে যুক্ত করা কোনোভাবেই মেনে না নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর জিইসি মোড়ে এক রেস্তোরাঁয় ‘সুয়াবিল অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের’ এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব আপত্তি উত্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও সুয়াবিল গ্রামের বাসিন্দা অধ্যাপক মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, ‘প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণের লক্ষ্যে নতুন উপজেলা বাস্তবায়নে সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইনি জটিলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডকে প্রস্তাবিত ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলার সঙ্গে সংযোজনের প্রস্তাব করেছে।’

বিজ্ঞাপন

নতুন এ প্রস্তাবে বৃহত্তর সুয়াবিল ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত উপজেলার সঙ্গে সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার অংশ বিশেষকে সংযোজন কারণে কারণে প্রচলিত আইন ও জনস্বার্থবিরোধী। ২০২১ ও ২০২৩ সালে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। এসব প্রতিবেদনের কোথাও সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার তিন ওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত ছিল না এবং অন্তর্ভুক্তির জন্য জনগণেরও কোনো দাবি ছিল না।’

‘বৃহত্তর সুয়াবিল ইউনিয়ন হতে প্রস্তাবিত ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। অথচ ফটিকছড়ি উপজেলা সদরের দূরত্ব মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটার। প্রস্তাবিত উপজেলা বাস্তবায়ন হলে এই এলাকার মানুষকে ৪ কিলোমিটারের বদলে ৪০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সকল নাগরিক সেবা নিতে হবে। তাছাড়া অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনসেবার পরিবর্তে বৃহত্তর সুয়াবিল ইউনিয়নের অধিবাসীদের দুর্ভোগ আরও অনেকগুণ বাড়বে।’

নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে প্রস্তাবিত উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করা হলে দ্বৈত প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হবে জানিয়ে তিনি সুয়াবিল এলাকার জনগণের মতামত নেওয়ার জন্য গণশুনানি করার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ’র পরিচালক রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ফটিকছড়ির আয়তন ফেনী জেলা থেকেও বড়। এখানে তিনটি উপজেলা বাস্তবায়নের দাবি বহু আগের। সরকার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের কিছু ইউনিয়ন নিয়ে ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা নামে আলাদা উপজেলা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা অত্যন্ত আনন্দের। তবে অবশ্যই সেই উপজেলার সদর দফতর হতে হবে যৌক্তিক হিসাবে নারায়ণহাটের আশেপাশে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আবারও ভুজপুরে উপজেলা নিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ ফটিকছড়ির সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করা হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উত্তর ফটিকছড়ি নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক ওসমান গণি মজুমদার, সুয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এস এম শফিউল আলম, বৃহত্তর সুয়াবিল অধিকার ফোরামের ডা. এস এম ফরিদ, আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসমাইল গনি, সুয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মনসুর আলী উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/এইচআই
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর