ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রামকান্তপুরে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাধায় জামায়াতে ইসলামীর পূর্বঘোষিত যোগদান অনুষ্ঠান ও নির্বাচনি জনসংযোগ সভা পণ্ড হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন সংগঠনটির উপজেলা আমির অধ্যাপক আবুল ফজল মুরাদ।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শনিবার বিকেল ৩টায় সালথা উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিধুপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জামায়াতের যোগদান অনুষ্ঠান ও নির্বাচনি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ফরিদপুর-২ আসনের জামায়াতের এমপি প্রার্থীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে স্থানীয় কিছু লোকজন জামায়াতে যোগদান করার কথা ছিল। কিন্তু একই সময় আমাদের শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানস্থলে স্থানীয় বিএনপি অন্যায়ভাবে সভা আহ্বান করেন। এমনকি আমাদের অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ারও ভাঙচুর করা হয়। সেইসঙ্গে যারা জামায়াতে যোগ দিতে চেয়েছিল, তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।’
আবুল ফজল মুরাদ আরও বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তিন-চারটি দলীয় ব্যানার তৈরি করেছেন। আমরা যেখানেই প্রোগ্রাম করবো, সেখানেই বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তবে আমরা ঝামেলা পছন্দ করি না। তাই বিষয়টি ওসি ও ইউএনওকে অবগত করি। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উভয় দলের নেতাদের সভা-সমাবেশ না করার পরামর্শ দেন। আমরা তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।‘
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জামায়াতের সভা-সমাবেশে এতদিন কোনো সমস্যা ছিল না। তবে আজকে যেহেতু আমাদের প্রোগ্রামে সরাসরি বাধা দেওয়া হয়েছে, সেহেতু আতঙ্ক তো আছেই। তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমরা আবারও ওইখানে সমাবেশ করব- ইনশাআল্লাহ।’
সংবাদ সম্মেলনো অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর অফিস সম্পাদক অধ্যাপক মিজানুর রহমান, উপজেলা নায়েবে আমির আজিজুর রহমান মজনু, সেক্রেটারি তরিকুল ইসলাম, ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা মিকাইল হোসেন, শ্রমিক কল্যাণের সভাপতি চৌধুরী মাহবুব আলী সিদ্দিকী, মাঝারদিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি ওলিউজ্জামান ও জামায়াত ইসলামী নেতা কাজী সায়েম প্রমুখ।
জামায়াতের অভিযোগের বিষয় সালথা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘জামায়াতের ওই সভাস্থলে স্থানীয় বিএনপি এক নেতা জামায়াতে যোগদান করার কথা ছিল। তাই বিএনপির কিছু নেতাকর্মী ওই সভায় বাধা দিয়েছে বলে শুনেছি।’
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আতাউর রহমান জানান, দুপক্ষ একই সময়ে, একই স্থানে সভা আহ্বান করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবার আশঙ্কা ছিল। পরে উভয় পক্ষকে স্থান ত্যাগ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ বিষযে কেউ অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।