ঢাকা: সিডনিতে নৃত্যাঞ্জলি ড্যান্স অ্যাকাডেমির আয়োজনে হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামাপূজা ও দীপাবলি উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। এ সময় সিডনির বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি রূপ নেয় এক অনন্য মিলনমেলায়।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৮ অক্টোবর) সিডনির ল্যাকেম্বার ইউনাইটিং চার্চে এক বর্ণিল এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
নৃত্যাঞ্জলি ড্যান্স অ্যাকাডেমির কর্ণধার মৌসুমী সাহা বলেন, ‘নৃত্যাঞ্জলি অ্যাকাডেমি গত বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিডনিতে প্রগতিশীল বাঙালিদের নিয়ে নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজন করে আসছে। আমাদের লক্ষ্য শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং সমাজে সম্প্রীতি, ভালোবাসা ও ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা ও দীপাবলী উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল পূজা, অঞ্জলি, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নৈশভোজ।
অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় ছিলেন রাজেশ সাহা, মৌসুমী সাহা ও কনা সাহা। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন রাজেশ ও রাকেশ সাহা। পূজা পরিচালনা করেন সিডনির সুপরিচিত পুরোহিত শ্রী বাসব রায় (বিগ বি)।
সন্ধ্যা ৬টায় পূজা শুরু হয় মন্ত্রোচ্চারণ, ধূপ, দ্বীপ, শঙ্খনাদ ও ঢাকের বাদ্যে। পূজার ধর্মীয় আচার সম্পন্ন হয় আবাহন, প্রাণ প্রতিষ্ঠা, হোমযজ্ঞ ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদানসহ সকল আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে। ধূপ-ধুনো, হুলুধ্বনি, করতাল ও কাসরের ছন্দে পুরো পরিবেশটি এক অপার্থিব আবহে ভরে ওঠে।
ধর্মীয় পর্ব শেষে অনুষ্ঠিত হয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যার গ্রন্থনা, পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন ড. রতন কুন্ডু এবং উপস্থাপনা করেন অদিতি দাস। অনুষ্ঠানের শুরুতে এক ক্ষুদে শিল্পীর গীতা পাঠে মুগ্ধ হয় দর্শকশ্রোতা। সঙ্গীত পরিবেশন করেন মঞ্জু ভৌমিক, মধুমিতা সাহা, পূর্ণতা কুন্ডু, অভিষেক ঘোষ, সুদেষ্ণা বিশ্বাস, নিলুফা ইয়াসমিন, মনাশ দে প্রমুখ। গীতি আলেখ্য উপস্থাপন করেন নমিতা চৌধুরী, আর শ্রুতিনাটক পরিবেশন করেন নূসরাত জাহান স্মৃতি ও তার কন্যা স্রোতস্বিনী। নৃত্য পরিবেশনায় অংশ নেন অ্যাকাডেমির শিশু শিল্পী- লিয়ানা, ঈশিতা ও সৃজিতা। আর মূল নৃত্যপর্বে ছিলেন- মৌসুমী সাহা, মৌসুমী সানা, কনা সাহা, অদিতি দাস ও তৃষা ভৌমিক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সিডনির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, নারী উদ্যোক্তা, কাউন্সিলর, অ্যাকাডেমিক, সাংবাদিকসহ কয়েকশো মানুষ।
শেষ পর্বে ছিল ভোজন ও আপ্যায়ন। অতিথিদের জন্য পরিবেশন করা হয় বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার- লুচি, ডাল, সবজি, সন্দেশ, নারু-মোয়া ও নৈশভোজের হরেক রকম পদ। ভবিষ্যতেও সিডনির শুদ্ধ ধারার বাঙালি সমাজকে একত্রে রেখে এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা দম্পতি মৌসুমী ও রাজেশ সাহা।