ঢাকা: বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো ধরনের বিদেশি হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। সেই স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস নেই। দেশের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে কারো হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।”
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত “বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমতা রক্ষায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, “বর্তমানে ১৪-১৫ মাস ধরে নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশ চলছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব না থাকায় রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা হারিয়ে গেছে। প্রশাসন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়— সব জায়গায় জবাবদিহিতার ঘাটতি স্পষ্ট। এটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ সংকেত।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচিত সরকার না থাকলে কারো কাছে জবাবদিহির প্রশ্নই আসে না। সরকার উপরে, জনগণ নিচে—মাঝখানে কোনো সেতু নেই। সেই সেতুই নির্বাচিত প্রতিনিধি, যা এখন অনুপস্থিত।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা কোনো অনির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করি না। আমাদের একটাই দাবি—যত দ্রুত সম্ভব জনগণের মালিকানা জনগণের কাছেই ফিরিয়ে দিতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে নির্বাচিত সংসদ গঠন করতে হবে।”
তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনই কেয়ারটেকার মুডে চলে যাওয়া উচিত। যারা বিতর্কিত, বা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের সরকারি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, “আমাদের সম্পর্ক হবে বিশ্বের প্রতিটি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও স্বার্থরক্ষার ভিত্তিতে। কিন্তু কোনো দেশের নির্দেশে নয়— বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক কৌশল বাংলাদেশ নিজেরাই নির্ধারণ করবে।”
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাত। এ ছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।