সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালকে কেন্দ্র করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সচালকদের সিন্ডিকেট ভাঙার লক্ষ্যে প্রশাসন অভিযান চালায়। অভিযানে হাসপাতালের ভেতরে অবৈধভাবে রাখা অ্যাম্বুলেন্সগুলো গেটের বাইরে বের করে দেওয়া হলে ধর্মঘটের ডাক দেন চালকেরা। ফলে, রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে এই অভিযান চালায় প্রশাসন।
সরজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘটের কারণে রোগীদের নিয়ে স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের মাইজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা জাকির মিয়া তার বাবার মরদেহ নিয়ে হাসপাতালের গেটের সামনে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাবার মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছি।’
রেজিয়া বেগম নামে এক স্বজন জানান, বিকেলে জন্মগ্রহণ করা তার অবুঝ শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সিলেটে রেফার করা হয়েছে। কিন্তু মায়ের জ্ঞান না ফেরায় এবং অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ধর্মঘটের কারণে তারা গাড়ি পাচ্ছেন না।
ভোগান্তিতে পড়া নাসির মিয়া বলেন, ‘বিকেল থেকে রোগী নিয়ে সিলেটে যাব, অথচ অ্যাম্বুল্যান্স পাচ্ছি না। সময় যত যাচ্ছে, রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে।’
অ্যাম্বুলেন্সচালক রিদয় মিয়া ধর্মঘটের কারণ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য আমরা আজকে রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্স সেবা বন্ধ রেখেছি।’
উল্লেখ্য, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ফিটনেসবিহীন অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার, রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, সিন্ডিকেটের সিরিয়াল মোতাবেক অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া এবং রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগ ছিল। এই অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতেই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
এদিকে, সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে অ্যাম্বুল্যান্স এনে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে।’