নোয়াখালী: জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর গণভোট আয়োজনকে কেন্দ্র করে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছে নোয়াখালী শহর জামায়াত। এসময় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পৌরবাজারে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এটিএম মাসুম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে তার ভাষণের মাধ্যমে একটি সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এটা কি জাতির সঙ্গে কোনো ভাল আচরণ করেছেন নাকি জাতির সঙ্গে মশকরা করেছেন। একইদিন নির্বাচন ও গণভোট-এটা জাতির সঙ্গে কেমন আচরণ আমরা জানতে চাই। জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী দিনে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠ অবাধ ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অঙ্গীকারে এদেশের জনগণ আবদ্ধ হয়। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা এই সনদকে আদর্শ মাধ্যম এবং পরবর্তীতে গণভোটের মাধ্যমে এটাকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম। এই দাবিতে আমরা যখন আন্দোলন শুরু করেছিলাম তখন একটি দল বলেছিল, এগুলো তো আলোচনার টেবিলে থাকার কথা, জামায়াত এগুলোকে রাজপথে কেন নিয়ে যাচ্ছে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর আপনারা বুঝতে পেরেছেন আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা কি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগেই সন্দেহ করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টার আশপাশে এমন কিছু কুচক্রী মহল আছেন যারা এই দেশকে অতীতেও সঠিক পথে চলতে দেয়নি আর ভবিষ্যতেও এই দেশকে সঠিক পথে চলতে দেবে না। আমরা এই চক্রান্ত আঁচ করতে পেরে ৫ দফা দাবির ভিত্তিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করি। এই আশংকার জেরে আমাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি ইসলামি দল রাজপথের আন্দোলনে সামিল হয়। আমাদের ৫ দফা দাবি ছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা ও সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়া, গণভোটের মধ্যে দিয়ে এই সনদকে এই জাতির জন্য স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এটাকে একটি মহাসনদ হিসেবে মর্যাদা দান করা, আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, বিগত স্বৈরশাসকের বিচার নিশ্চিত করা, নতুন কোনো স্বৈরশাসক যাতে তৈরী না হতে পারে সেজন্য নির্বাচন পরিষদকে স্বাধীনসত্ত্বা দান করা। এটা শুধু আমাদের দাবি নয়, দেশের ৭০ ভাগ জনগণ এই দাবির পক্ষে।’
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জনগণ জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। অন্তর্বর্তী সরকার যেন এটার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। অথচ জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত ভাইদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই অন্তর্বর্তী সরকার ও তার প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া গতকালের ভাষণ জাতিকে হতাশ করেছে। এ সিদ্ধান্ত তিনি কাদের পরামর্শে নিয়েছেন আমরা সেটা জানতে চাই। নির্বাচনের দিন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য ব্যস্ত থাকবে সেদিন গণভোট হবে না কিংবা গণভোট ত্রুটিপূর্ণ হবে এবং গণভোটের আসল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে না।‘
শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক নাসিমুল গণি মহলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নোয়াখালী-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ও নোয়াখালী জেলা জামায়াতে আমীর ইসহাক খন্দকার।
এছাড়াও সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জেলা সেক্রেটারি ও নোয়াখালী-৩ আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা বোরহান উদ্দিন, নোয়াখালী-৫ আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন, নোয়াখালী-২ আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা সাইয়েদ আহমেদ, শহর আমীর মাওলানা মো. ইউসুফ, নোয়াখালী শহর ছাত্রশিবির সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান প্রমুখ।