ঢাকা: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, জনগণকে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারলেই দেশে শান্তি ফিরবে। তিনি অভিযোগ করেন, অতীতে নির্বাচন কমিশন সরকারের ‘মন্ত্রী’ হিসেবে কাজ করেছে; এবার ইসির সামনে আস্থা ফেরানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। মানুষ তিনবার ভোট দিতে পারেনি জানিয়ে তিনি বলেন, না খেয়ে থাকতে রাজি, কিন্তু ভোট দিতে না পারার যন্ত্রণা সহ্য করতে রাজি না।
রোববার (১৬ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে তিনি এ কথা বলেন।
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজ তিনি প্রস্তাব দেখতে আসেননি, এসেছেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে সম্মান জানাতে এবং সংলাপে অংশ নিতে।
তিনি জানান, সরকারের ডাকে আলোচনায় যাওয়ার বিষয়ে তার অনীহা বহুদিনের। ‘১৫ মাস হলো, সরকার ডাকলে আর যাই না। নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারের ডাকে আলোচনায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না, মন্তব্য করেন তিনি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, নিবন্ধিত দল ৪০-৫০টি হলেও আলোচনা হয় দুই–তিনটির সঙ্গে, এটি কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয়। তার ভাষায়, অতীতে এমন অবস্থাও তৈরি করা হয়েছিল যেন ‘শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, জয় বাংলা বলা অপরাধ হতে পারে না। এই স্লোগানের জন্য মানুষকে কারাবন্দি করা হলে ইতিহাসের কাছে জবাব দিতে হবে।
অতীত নির্বাচন প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী জানান, তার নিজের অভিজ্ঞতায় ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে। এক কেন্দ্রে ১৭০৮ ভোট ২৬০০-তে উন্নীত হওয়ার উদাহরণ দেন তিনি।
বঙ্গবীর অভিযোগ করেন, আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে কিছু রাজনৈতিক শক্তি মুরুব্বিদের মানে না, বাংলাদেশের ইতিহাসকে অস্বীকার করে—যা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক।
তিনি আরও বলেন, টাকা খেলে বা মানুষ মারলে শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আন্দোলনের কারণে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না। যদি বলেন শেখ হাসিনা অপসারণের কারণে শাস্তি দিতে হবে, তাহলে আল্লাহকে শাস্তি দিতে হবে, মন্তব্য করেন তিনি।
গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে করার সিদ্ধান্তকে ‘বড় অসংগতি’ আখ্যা দিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, চারটি প্রশ্নে ভোটাররা দুইটি ‘হ্যাঁ’ এবং দুইটি ‘না’ দিতে পারবে কি না—তা জনগণ জানে না। অংশগ্রহণ কম হলে পুরো নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
বঙ্গবীর বলেন, ‘আপনারা যদি জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারেন, তাহলেই দেশের শান্তি ফিরবে। সুইজারল্যান্ডের চেয়েও শান্ত দেশ হতে পারে বাংলাদেশ।