ঢাকা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, পঞ্চগড়-১ আসনে যদি আমরা জাতীয় সংসদে আগামীতে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি, আমাদের এই পঞ্চগড়ে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ সব ধরনের অপকর্মের কবর রচনা করব।
রোববার (১৬ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী প্রধান কার্যালয় থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসনে এনসিপির দলীয় প্রতীক ‘শাপলাকলি’ নিয়ে লড়তে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। ফরম সংগ্রহ শেষে তিনি পঞ্চগড়বাসীর জন্য নিজের অঙ্গীকার ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
সারজিস বলেন, ‘পঞ্চগড়-১ আসনে আমরা জাতীয় সংসদে আগামীতে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি, আমাদের এই পঞ্চগড়ে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ সব ধরনের অপকর্মের কবর রচনা করব। আমাদের পঞ্চগড়ের যে স্বাস্থ্যখাত এই স্বাস্থ্যখাতে হাসপাতাল ডাক্তার থেকে শুরু করে পঞ্চগড়ের যে প্রয়োজনীয় একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল কলেজ এবং নার্সিং কলেজ সেটি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যত দ্রুতভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেটি হবে এনসিপির সবচেয়ে বড়ো একটি অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড়ে শিক্ষাকে কীভাবে রাজনীতি থেকে আলাদা করা যায় এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা যায় সেটি আমাদের অন্যতম একটি লড়াই হয়ে থাকবে। পঞ্চগড়ের মানুষের দারিদ্র্যতার সঙ্গে যে লড়াই, সেই লড়াই থেকে বের করার জন্য পঞ্চগড়ের শিল্পায়ন প্রয়োজন। পঞ্চগড়ের বাংলাদেশের সবচেয়ে নৈসর্গিক যে পরিবেশ রয়েছে, সেই পরিবেশ যেন বিন্দুমাত্র বিপন্ন না হয় সেটি সামনে রেখে কীভাবে আমরা পঞ্চগড়ের গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে পারি, সেজন্য এনসিপি সবচেয়ে বেশি তাদের জায়গা থেকে অ্যাকটিভভাবে কাজ করে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা পঞ্চগড়ের মানুষের কাছে আমাদের পক্ষ থেকে-এনসিপির পক্ষ থেকে এইটুকু কমিটমেন্ট করতে চাই, আমাদের পঞ্চগড়ের যতটুকু প্রাপ্য তার চেয়ে বেশি আমাদের লাগবে না। রক্তের বিনিময় হোক, জীবনের বিনিময় হোক, আর লড়াইয়ের বিনিময় হোক; আজ থেকে আগামীতে বাংলাদেশে যেই সরকারি আসুক না কেন, তাদের থেকে আমরা আমাদের পঞ্চগড়ের প্রাপ্য এবং ন্যায্য অধিকারটুকু আদায় করে নিয়ে যাব। আমাদের পঞ্চগড়ের স্বাস্থ্যখাত সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত, শিক্ষার অবস্থা এবারের অপ্রত্যাশিত রেজাল্ট এর মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে, এখানে আমরা তার অপব্যবহার দেখেছি। পঞ্চগড়ের পাথর সমৃদ্ধ একটি এলাকা কিন্তু সেই পাথর উত্তোলনকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব দেখেছি, আমরা এই পঞ্চগড়ের প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দেখেছি, অনেক নিরীহ মানুষের উপরে হয়রানি, জুলুম, নির্যাতন, মিথ্যা মামলার জেলের চক্কর খাটা, থানায় চক্কর খাটার মতো অসংখ্য অপ্রত্যাশিত ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের সাধারণ মানুষকে যেতে হয়েছে।
সারজিস বলেন, আজকে আমার জীবনের অন্যতম একটি স্মরণীয় এবং স্মৃতিময় দিন। আমি মনোনয়ন আবেদনপত্রটি সংগ্রহ করেছি। আমার জন্মভূমি যেখানে, যেখানে আমার শৈশব-কৈশোরের বেড়ে ওঠা, আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিগুলো যেই জায়গাটিকে কেন্দ্র করে, এখন পর্যন্ত আমাকে বড়ো করে তুলেছে, আমার সেই প্রিয় জন্মভূমি সেই জায়গা পঞ্চগড়-১ আসনকে কেন্দ্র করে আমি আমার আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছি। আমি মনে করি, আমরা যেমন আমাদের এই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করি, তেমনিভাবে আমাদের যেই জন্মস্থান, আমাদের ওই প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল বাংলাদেশের সর্বউত্তরের জেলা সেই জায়গাটিরও দায়িত্ব নেওয়া, এটা আমার অন্যতম বড়ো একটি দায়বদ্ধতা। বিগত সময়ে আমার এই অভাগা পঞ্চগড় জেলায় অনেক মন্ত্রী ছিল, কিন্তু পঞ্চগড়ের প্রাপ্য অধিকারটুকু আদায় করে নিয়ে যাওয়ার মতো পঞ্চগড়ের জনমানুষের নেতা আমরা এর আগে পাইনি।
এসময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।