ঢাকা: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-বিধি লঙ্ঘন করলে কাউকেই ছাড় দেবে না নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তৃতীয় দিনের প্রথম ধাপে পাঁচটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে এ কথা বলেন কমিশনাররা।
নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সামনে নির্বাচনে যারা আইন বিধি লঙ্ঘন করবেন, তারা নির্ঘাত পেরেশানিতে পড়বে এটা নিশ্চিত। কোনো বিষয়ে ইসি কম্প্রমাইজ করবে না। কাউকেই কোন ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য দলগুলোর সহযোগিতা দরকার।’
মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ভিজিলেন্স–অবজারভেশন টিম, মনিটরিং টিম, আইনশৃঙ্খলা সেল ও ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষক দল থাকবে। প্রতি আসনে দু’জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি ও জরিমানা করবেন।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘এবার আচরণবিধিকে প্রথমবারের মতো সরাসরি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। ফলে আচরণবিধি ভঙ্গ এখন নির্বাচন-পূর্ব অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রার্থিতা বাতিলসহ সংশ্লিষ্ট সব শাস্তি প্রযোজ্য হবে। তাই রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধি মানাতে অঙ্গীকারনামা বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। এটি একধরনের স্মারক ও জবাবদিহি নিশ্চিতের উপায়।’
মসজিদ, মন্দির, কেয়াং, গির্জা, সরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেকোনো ধরনের প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়া অস্ত্রের ৮১ শতাংশ এবং গোলাবারুদের ৭৩ শতাংশ উদ্ধার হয়েছে। ক্রস-বর্ডার অস্ত্র প্রবাহ ঠেকাতে বাহিনীসমূহের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা হয়েছে। আউট অব কান্ট্রি ভোটিংকে বড় চ্যালেঞ্জ। তবু কমিশন মাত্র নয় মাসে জটিল প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। ভোটের গোপনীয়তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই বড় দায়িত্ব।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার, ডিপফেক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার মোকাবেলায় মনিটরিং সেল গঠন ও জাতিসংঘের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ইসি সানাউল্লাহ। এ সময় তিনি বলেন, “আগামীকাল আমাদের আউট অব কান্ট্রি ভোটিংয়ের নিবন্ধনের যে প্লটফর্মটি ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ লঞ্চ করা হবে।”
নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নয়, এটি গোটা জাতির বিষয়। তাই, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় সবার সহযোগিতা অপরিহার্য। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠিন হলেও জাতি একসঙ্গে দাঁড়ালে সফলতা সম্ভব, যেমন শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
আগের তিনটি ভালো নির্বাচনের অভিজ্ঞতা সামনে রেখে তিনি বলেন, ‘নেপাল–শ্রীলঙ্কার মতো দেশ পারলে বাংলাদেশও পারবে। কেন্দ্র দখল প্রতিহত করা ও আচরণবিধি মানা রাজনৈতিক দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।’