ঢাকা: পুঁজিবাজারে কারসাজির মাধ্যমে ২৫৬ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ মোট ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ২৫ ও ২৬ নভেম্বর অভিযুক্তদের দুদকের সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, সাকিব আল হাসানকে ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় হাজির হওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাকিবের বিরুদ্ধে ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন’-সংক্রান্ত পৃথক একটি অনুসন্ধানও চলছে, যার তথ্যও একই দিনে গ্রহণ করা হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্স ও সোনালী পেপারস লিমিটেড—এই তিন কোম্পানির কারসাজি করা শেয়ারে বিনিয়োগ করে প্রতারণার মাধ্যমে সাকিব আল হাসান ‘রিয়েলাইজড ক্যাপিটাল গেইন’ নামে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
সাকিব ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন— সমবায় অধিদপ্তরের সাবেক উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (হিরু) ও তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মো. বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি আবুল খায়ের সহযোগীদের সঙ্গে যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯–এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। বিও হিসাব ব্যবহার করে ফটকা ধরনের সিরিজ লেনদেন, প্রতারণামূলক অ্যাকটিভ ট্রেডিং, গ্যাম্বলিং স্পেকুলেশনসহ বিভিন্ন উপায়ে তিনি বাজার কারসাজি করে নির্দিষ্ট শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছেন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, অস্বাভাবিক ক্যাপিটাল গেইন হিসেবে উত্তোলিত অপরাধলব্ধ অর্থ বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে উৎস গোপন করেছেন আবুল খায়ের। এ কাজে তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানও সহায়তা করেন। তদন্তে দেখা গেছে, আবুল খায়েরের নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকা।
গত ১৭ জুন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলাটি করা হয়। দুদক বলছে, তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।