ঢাকা: নিজেদের এতো সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বিদেশ নির্ভরতা কেন- দেশের শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এমন প্রশ্ন তুলেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী মেটাল এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন প্রশ্ন তোলেন।
কাঁচামাল আমদানিতে নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রযুক্তিগতভাবে স্টিল বিল্ডিংয়ের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আপনাদের সক্ষমতা প্রায় ২০ লাখ টন। যদি ধরে নেই ১০ লাখ টন আপনারা ব্যবহার করেন, সেটাকে ২০০ টাকা করে কেজি ধরলেও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হয়। এই ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আপনারা ১৫-১৬ হাজার কোটি টাকার মেটেরিয়াল আমদানি করেন। ৩-৪ হাজার কোটি টাকার অ্যাকচুয়াল ব্যবসা করেন। এই তিন-চার হাজার কোটি টাকার জন্য সবাই প্রতিযোগিতা করছেন। কেন আমরা বলছি না, ১৫ হাজার কোটি টাকার স্টিল ইমপোর্ট হয়— এটা আমরা নিজেরা বানাব? আমাদের এই ২০ হাজার বা ৩০ হাজার কোটি টাকার যে শিল্পটা আছে, এটা থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা যেমন বলেন- সরকার বিদেশ থেকে কেন এই ধরনের কাঠামো আমদানি করছে, তেমনি আপনারাও কেন র-মেটেরিয়াল (কাঁচামাল) সবকিছুই আমদানি করছেন—দুজনই দুইজনকে প্রশ্ন করতে হবে। পদ্মা ব্রিজের মতো স্ট্রাকচার আপনারা বানাতে পারবেন না—এটা আমি বিশ্বাস করি না। কেন পারবেন না? এটা কি এমন জটিল কাজ? আমি আশা করি আপনারা এবং সরকার নিজেরাই একটু চিন্তা করবেন কীভাবে আমাদের এই অর্থনৈতিক মূল্যমান—এই ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকার শিল্প—আমরা ৪-৫ হাজার কোটি টাকা ইন্টারনালি রিটার্ন করছি, বাকি পুরোটাই রয়ে গেছে। কীভাবে আমরা আমাদের এই সক্ষমতা কাজে লাগাব। আমার ধারণা, সবাই এক হয়ে কাজ করলে সম্ভব। আপনারা আপনাদের প্রয়োজনগুলো আমাকে অফিসিয়ালি জানাবেন, আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আজকে সময় এসেছে একবার পেছনে ফিরে তাকানোর। আমাদের যে অর্থনৈতিক মূল্যমান, এর কতটুকু আমরা নিজস্ব সক্ষমতায় তৈরি করতে পারি, দেশের মধ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারি, দেশেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সৃষ্টি করতে পারি এবং সামগ্রিকভাবে দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টিল বিল্ডিংয়ের যে নির্মাণ বৈচিত্র্য, নির্মাণশৈলী খুব ইনক্লুসিভ। যার শুধু একটাই সমস্যা, সেটা হচ্ছে অগ্নিকাণ্ড। কিন্তু বর্তমানে আগুন প্রতিরোধের জন্য অনেক নিয়ামক আছে। এখন বিভিন্ন মেটেরিয়াল আছে যেগুলো দিয়ে আমরা সহজেই অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ করতে পারি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্টিল বিল্ডিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি মো. রাশেদ খান। কী-নোট স্পিকার হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহমেদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্টিলমার্ক বিল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. রেজওয়ানুল মামুন।