Saturday 22 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফারাক্কা বাঁধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পদ্মা ব্যারেজ প্রয়োজন: মনির হায়দার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২২ নভেম্বর ২০২৫ ২২:৩৬ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ২২:৩৯

সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। ছবি: সারাবাংলা

রাজবাড়ী: প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী ও পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা মনির হায়দার বলেছেন, ফারাক্কার বাঁধের জন্য আমাদের যে ক্ষতি তা পুষিয়ে নিতে রাজবাড়ীর পাংশার হাবাসপুরে পদ্মা ব্যারেজ প্রয়োজন।

শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে শহরের কনভেনশন সেন্টারে পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মনির হায়দার বলেন, ফারাক্কা বাঁধের কারণে অনেক নদী মরে গেছে, নদীগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের জীব-বৈচিত্র, কৃষি সবকিছুই এখন হুমকির মুখে। ১৯৭৬ সালের ১৬ই মে ফারাক্কার লংমার্চ হয়েছিল, কিন্তু এই লং মার্চের মধ্যে দিয়ে ভারতের ফারাক্কা বাঁধ ভেঙ্গে ফেলা যাই নাই, আর যাবেও না। ফারাক্কা বাঁধের পানি নিয়ে ভারতকে বাধ্য করা সম্ভব নয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমরা অচিরেই আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের নেতৃত্বে হাবাসপুর অভিমূখে লং মার্চ করব।ফারাক্কা লং মার্চের বহু বছর পর আমরা এমন এক লংমার্চ করব, যেখানে সমগ্র অঞ্চলের লাখো মানুষ থাকবে। এই লং মার্চের মাধ্যমে আমাদের এই মহাবিপদ পানির সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করতে রাষ্ট্রকে বাধ্য করব।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টার সাথে আমরা পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর বিষয়ে কথা বলেছি। আপনাদের আশ্বস্ত হওয়ার জন্য বলছি, প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা সবাই জানি আগামির যুদ্ধ হবে পানি নিয়ে, এটা গবেষণা বলছে। পানি আগামীতে সংকটের বিষয় হবে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা খ্যাতিমান একজন মানুষ। তিনি মানুষের সমস্যা ও সংকট নিয়ে কাজ করেছেন গোটা জীবন। তিনি বলেছেন তার কাছে এই প্রকল্পের ও এই ব্যারেজের গুরুত্ব অপরিসীম। যেহেতু প্রধান উপদেষ্টার এই উপলব্ধি করেছেন, সেহেতু আমরা আশা করছি তিনি যতদিন এই দায়িত্বে আছেন এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ধাপে চলে যাবে।

তিনি আরও বলেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে পদ্মা ব্যারেজ তৈরি করতে ৭ বছর লাগবে। ফারাক্কা তৈরি করতে লেখেছিল ১৪ বছর। সুতরাং এটা একাধিক সরকারের দায়িত্বের মধ্যে এ কাজটা পড়বে। এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। এই আন্দোলনকে দিন দিন জোরদার করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে এই আন্দোলনে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়বে।

সেমিনারে ‘ফারাক্কা ব্যারেজ ও বাংলাদেশের সংকট’ এবং ‘পদ্মা ব্যারেজ ও বাংলাদেশর সম্ভাবনা’। ‘দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও আগামীর সম্ভাবনা ও আলোকিত রাজবাড়ী কেমন চাই’ বিষয় উপস্থাপন করা হয়।

এসময় ‘ফারাক্কা ব্যারেজ ও বাংলাদেশের সংকট’ এবং ‘পদ্মা ব্যারেজ ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক প্রকৌশলী মো. আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ‘দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও আগামীর সম্ভাবনা’ নিয়ে প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন শামীম বিয়ষবস্তু উপস্থাপন করেন।

এছাড়া ‘আলোকিত রাজবাড়ী-কেমন রাজবাড়ী চাই’ বিষয়ে পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অর্ণব নেওয়াজ মাহমুদ হৃষিত ও সাদাত খান অ্যানিমেশন প্রদর্শন করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ, পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন কমিটির জাতীয় কমিটির মহাসচিব অবসারপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবু ওহাব মো. হাফীজুল হক, সাবেক রাষ্ট্রদূত খোন্দকার আব্দুস সাত্তার, অবসারপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোহসীন, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন কমিটির উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জালাল, সাংবাদিক মেহেদী হাসান পলাশ বক্তব্য দেন।