ঢাকা: সংস্কারের কথা বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হলেও কার্যক্রম শেষ করতে কতদিন লাগবে, রূপরেখা কী- তা প্রকাশ করতে পারেনি প্রশাসন। সেইসঙ্গে বিভিন্ন হল পরিদর্শনের পর কোন হল বসবাসের উপযোগী, কোনটি নয়, তাও পরিষ্কার করা হয়নি।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি তাহমীদ আল মোদ্দাসসীর চৌধুরী। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ১০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি দ্রুত শীতকালীন ছুটিকে ভূমিকম্পের সঙ্গে দেওয়া ছুটির সঙ্গে একত্র করে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবি করেছেন। সেইসঙ্গে যেসব পরীক্ষা রয়েছে, তা দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি করেছেন। এছাড়াও, যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বিজয়ের মাস পালন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ডাকসুর একাধিক নেতার ইতিহাস বিকৃতির কারণে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তাহমীদের সঙ্গে জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন সরকার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। তাহমীদ বলেন, ‘ভূমিকম্পের প্রথম ঢেউ আসার পর কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই একদিনের নোটিশে হলগুলো খালি করা হয়। সংস্কারের কথা বলা হলেও তার রূপরেখা কী, কতদিন সময় লাগবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। হলগুলোতে যে পরিদর্শন করা হয়েছে, তার রিপোর্ট কী, তা আমাদের সামনে পরিষ্কার করেনি।’
তিনি বলেন, ‘যেভাবে সংস্কার করা হচ্ছে, প্যালেস্টার-তারজালি দেওয়া হচ্ছে, এতে হল নিরাপদ হবে কি না, সে প্রশ্ন সবসময় থেকে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম ছুটি দেওয়ার সময় আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, এই ধরনের পরিকল্পনাহীন ছুটি অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটির দিকে নিয়ে যেতে পারে। শিক্ষার অধিকার থেকে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করতে পারে। তখন প্রশাসন জানিয়েছিল, শীতকালীন ছুটি মার্জ করা হতে পারে। কিন্তু এখন শিক্ষার্থীদের মতামত ছাড়াই ক্লাস অনলাইনে নেওয়ারে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং ছুটি ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত লম্বা করা হয়েছে।’
তাহমীদ বলেন, ‘বছরের এই সময়ে সব বিভাগে চূড়ান্ত পরীক্ষা থাকে। এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়। অনেকে বিসিএস পরীক্ষায় বসতে পারে। অনেকে চাকরি জীবনে প্রবেশ করে। অনেকেই ফল সিজনে উইন্টারে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারে। এই মুহূর্তে পরীক্ষা বন্ধ করার মাধ্যমে ক্লাস-পরীক্ষা ব্যাঘাত ঘটাবে। নতুন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
ক্যাম্পাস বন্ধ করার মাধ্যমে ডাকসু প্রতিনিধিরা নিজেদের নির্বাচনি এলাকায় প্রচারে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন এই ছাত্রনেতা। এটিকে নেতিবাচক ‘উদাহরণ’ হিসেবে মন্তব্য করেন তিনি। এই নেতা আরও বলেন, ‘এখন একটি সামাজিক ফ্যাসিবাদ তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে আপনি বিরুদ্ধে কথা বললে আপনাকে ডিহিউমিনাইজ করা হবে। এখন ছাত্রলীগীয় কায়দায় ফ্যাসদিবাদের জন্ম দিচ্ছে।’