আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তে আবারও শুক্রবার দিবাগত রাতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষই একে অপরকে প্রথমে গুলি চালানোর জন্য দায়ী করেছে।
আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানান, পাকিস্তানি বাহিনী কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক এলাকায় হামলা চালায়। এর জবাবে আফগান বাহিনী পালটা প্রতিক্রিয়া জানায়।
অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মুখপাত্র মোশাররফ জায়েদি বলেন, আফগান বাহিনীই কোনো উসকানি ছাড়াই চামান সীমান্তে গুলি চালিয়েছে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান তার ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও সজাগ রয়েছে।’
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের তথ্যমতে, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয় এবং প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তা চলে। কান্দাহারের তথ্য বিভাগের প্রধান আলী মোহাম্মদ হাকমাল জানান, পাকিস্তানি বাহিনী হালকা ও ভারী গোলাবারুদ ব্যবহার করে হামলা চালায়। মর্টারের গোলা কিছু বেসামরিক বাড়িতে আঘাত হানে। তবে পরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষ বন্ধে সম্মত হয় বলে তিনি জানান।
২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই কাবুল ও ইসলামাবাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তান তাদের ভূখণ্ডে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং আইএসআইএল/আইএস খোরাসান (আইএসকেপি)-এর মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে। যদিও আইএসকেপি আফগান তালেবানের কট্টর শত্রু।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে দুই দেশের সীমান্তে টানা এক সপ্তাহের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ৭০ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে ১৯ অক্টোবর কাতারের রাজধানী দোহায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে কাতার, তুরস্ক ও সৌদি আরবে একাধিক দফা আলোচনার পরও স্থায়ী শান্তি চুক্তি সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনা কোনো সমাধান ছাড়াই শেষ হয়, যদিও উভয় পক্ষ সাময়িক যুদ্ধবিরতি চালু রাখার বিষয়ে একমত হয়।