আসামে ৫ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা
২ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:৫৭
।। শুভজিৎ পুততন্ডু।।
কলকাতা: ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্য আসামে গুলি করে পাঁচ বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০১ নভেম্বর) সন্ধ্যার কিছু পরে তিনসুকিয়া জেলার ধোলা সাদিয়া সেতুর কাছে খেরবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, হত্যাকাণ্ডের জন্য আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফাকে (ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম) প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে। সম্প্রতি আসামে নাগরিক তালিকা হালনাগাদ নিয়ে উত্তেজনার জের ধরে জঙ্গিরা এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
নিহতরা হলেন অবিনাশ বিশ্বাস, শ্যামল বিশ্বাস, অনন্ত বিশ্বাস, সুবল দাস ও ধনঞ্জয় নম:শুদ্র। মৃতদের মধ্যে তিনজনই একই পরিবারের বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় আহত একজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, হিন্দু বাঙালি সম্প্রদায়ের ওই ছয় ব্যক্তি খেরবাড়ি এলাকায় একটি মুদি দোকানে বসেছিলেন। তখনই জলপাই রঙের পোশাক পড়া সশস্ত্র জঙ্গিরা তাদের সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ব্রহ্মপুত্র নদের ধারে সারি করে বসিয়ে রেখে গুলি করে হত্যা করে।
আসামের এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানান ‘ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত ব্যক্তিকে তিনসুকিয়া সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তার অবস্থা সঙ্কটজনক। আমরা অপরাধীদের সনাক্ত করতে চেষ্টা করছি। কিন্তু যেভাবে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে তাতে সন্দেহের তীর আলফা’র দিকেই যাচ্ছে।’
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। ঘটনার পরই রাজ্যটির পানি সম্পদ মন্ত্রী কেশব মহান্ত এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রী তপন কুমার গগৈ-কে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, পাঁচ বাঙালিকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
টুইটার পোস্টে মমতা জানান, অসম থেকে ভয়ঙ্কর খবর পেলাম। তিনসুকিয়া জেলায় নৃসংশ হামলা ও শ্যামল বিশ্বাস, অনন্ত বিশ্বাস, অবিনাশ বিশ্বাস, সুবল দাস ও ধনঞ্জয় নমশুদ্র-র হত্যাকান্ডের ঘটনার কঠোর নিন্দা জানাই। এটাই কি জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ফল?
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবারও পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার এক জনসমাবেশে মমতা দাবি করেন ভারতের আসাম রাজ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির জন্য বহু মানুষ আত্মহত্যা করছে। নাগরিকপঞ্জিতে নাম না ওঠার আতঙ্কে আছে মানুষ। মর্যাদা হারিয়ে মানুষ এখন আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।
মমতা আরও বলেন, বাংলাকে আসাম হতে দেব না। আসামে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির জন্য। আসামে বাঙালি খেদাও, গুজরাটে বিহারী খেদাও এই তো চলছে। তবে এটা খুব স্পষ্ট করে জেনে রাখুন, অসহায়দের পাশে আর কেউ না থাকলেও বাংলা সবসময় থাকবে। যাদের ওরা তাড়িয়ে দেবে বাংলা তাদের আশ্রয় দেবে।
সারাবাংলা/এনএইচ